তিল গাছ
প্রচলিত নাম : তিল
ইংরেজী নাম : Sesamum
বৈজ্ঞানিক নাম : Sesamu indicum Linn.
পরিবার : Pedaliaceae
পরিচিতি : তিলগাছ লম্বায় খুব বেশী বড় হয় না। উর্বর মাটি হলে আড়াই ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। কাণ্ড নরম এবং লোমযুক্ত থাকে। পাতা তিন থেকে পাঁচ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। অবশ্য, নতুন ফুল খুবই ছোট। তিল লাল, সাদা ও কালো হয়। কালো তিল ঔষধে ব্যবহার হয়। লাল তিলের গাছ কালো তিলেরই মতো। ফল চিত্রাবিচিত্র। পাতা কালো তিলের চেয়ে আকারে কিছুটা বড়। কালো তিলের বীজের মধ্যে তেলের পরিমাণ বেশি থাকে। শীতের শেষে সব ধরনের তিল গাছে ফুল ধরে এবং তার কয়েক সপ্তাহ পরে ফল ধরতে শুরু করে।
বিস্তৃতি : বাংলদেশের সর্বত্র
চাষাবাদ : তিল বর্ষার শেষে জমিতে ছিটিয়ে বপন করা হয়।
ঔষধি ব্যবহার :
১) রক্ত আমাশয় : পনের থেকে কুড়ি মি. লিটার তিল পাতার টাটকা রস রোজ তিনবার করে খেলে রক্ত আমাশয়ে বেশ উপকার হয়। রোগের অবস্থা বুঝে দশ দিন খেতে হবে। তবে রক্তপড়া কমলে এবং বারেবারে মলত্যাগ কমে এলে দিনে দুবার খাওয়া প্রয়োজন।
২) বাত রোগে : চাটু বা লোহার কড়াই , চুলায় চাপিয়ে, গরম হবার পর তাতে ৫০ গ্রাম কালো তিল দিয়ে ভেজে নিতে হবে। এরপর ভাজা তিলকে জ্বাল দেয়া ৩০ মি. লিটার দুধে পনেরো মিনিট ভিজিয়ে সে তিলকে ঐ দুধ দিয়ে বাটতে হবে। ভালভাবে বাটা হলে তা দিয়ে বাতে আক্রান্ত অঙ্গে পুরো করে প্রলেপ দিলে যন্ত্রণা কমে যাবে। কেবল বাত নয়, ফোড়া এবং বিষ ফোড়া, কিছুক্ষেত্রে যন্ত্রণাদায়ক ব্রণে তিলের বাটা প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়।
৩) পাকা চুল কালো করতে : তিলের শেকড়ে চুল কালো করার ক্ষমতা রয়েছে। কাঁচা শেকড় বেটে, গোসলের দু-তিন ঘন্টা আগে তা মাথায় মাখলে পাকা চুল ধীরে ধীরে কালো হবে।
৪) দন্ত বিষে : যাদের কোন কিছু দাঁতে লাগলে দাঁত শিরশির করে, ঠাণ্ডা কিছু খাওয়া যায় না, অকালে মাড়ী আলগা হয়ে দাঁত নড়ছে বা ঝুলে এসেছে, এদের উচিত রোজ সকালে ৮/১০ গ্রাম কালো তিল (খোসা পরিস্কার করা) বাটা জলসহ খাওয়া এবং এ দ্বারা দেহের পুষ্টিও হবে। দাঁতের ও মাড়ির রোগও সেরে যাবে।
৫) অর্শ্বের বলির ব্যথায় : কাল তিল বাটা আর গাওয়া ঘি একসঙ্গে আধ-বাটা করে তারপর সেটাকে গরম করে ন্যাকড়ায় পুটুলী বেঁধে মলদ্বারে সেঁক দিলে ২/১ দিনের মধ্যে অর্শ্বের বলিটা চুপসে যায়।
৬) ফোঁড়ায় : কালো তিল বেটে, তার সঙ্গে যবের ছাত ও মাত্ৰামত টক দই মিশিয়ে অল্প গরম করে ঐ ফোঁড়ার উপর পুলটিসের মত লাগিয়ে দিতে হবে। এমনভাবে দই মেশাবেন যেন বেশী পাতলা না হয়ে যায়। এটা সকালে ও বিকেলে দিনে দুবার লাগালে ফোড়াটা পাকিয়ে, ফাটিয়ে দেবে।