নটে গাছ
নটে
প্রচলিত নাম : গোবরনটে, কাঁটানটে, বননটে, ডাটাশাক, ডেঙ্গা, চাপানটে, টুনটুনি নটে ও গেঁটিনটে
ইংরেজী নাম : Pig weed
বৈজ্ঞানিক নাম : Amaranthus জেনাসের ৮টি প্রজাতি আছে : Amaranthus tricolor Linn (লালশাক বা ডেঙ্গা), A. lividus Roxb. (গোবরনটে বা ডাঁটাশাক), A. polygamus Linn. (শ্বেতমুর্গা বা চাপানটে), A. spinosus (কাঁটানটে), A. tenuifolius Willd. (গেঁটিনটে), A. viridis Linn. (নটেশাক), A. faciata (বননটে) afsats: Amaranthaceae
পরিচিতি : নটে বর্ষজীবী বীরুৎ এবং আমাদের দেশের খুব আপন গাছ।
১। গোবর নটে : উপরের দিকে খাড়া বা ভুশায়িত বর্ষজীবী বীরুৎ। সাধারণ আগাছা হিসেবে জন্মে। বড় পাতার রসালো ধরনের সবজি হিসেবে আবাদ করা হয়। কাণ্ড হাল্কা থেকে দৃঢ়, সরল, লম্বা বৃন্তযুক্ত, পাতার ফলক ডিম্বাকৃতি, ফুল সবুজ, দৃঢ় স্পাইক এবং কাক্ষিক সামইম গুচ্ছ, বীজ চ্যাপ্টা, খুব ছোট ও খয়েরী।
২। কাঁটানটে : বর্ষজীবি বীরুৎ, খাড়া, কন্টকাকীর্ণ ও সুক্ষ্ম লোমযুক্ত। অল্প বয়সে গাছ সবুজ দেখা গেলেও পরিণত বয়স লাল ও বেগুনি রঙের হয়। রাস্তার ধারে ও পতিত জমিতে প্রচুর জন্মে। কাণ্ডে প্রচুর শাখা, গাঁট শক্ত এবং গাঁট থেকে প্রশাখা বের হয়। কাণ্ড ৩০-৬০ সে.মি. উঁচু, কাটা খুব শক্ত ও সোজা। পাতা মধ্যম, চওড়া, গোড়া কীলাকৃতি অর্থাৎ অগ্রভাগ চওড়া, মধ্যভাগ সামান্য চাপা ও খাঁজযুক্ত এবং নিচের দিক ক্রমশঃ সরু। পুষ্পদণ্ড গুচ্ছাকৃতি। ফুল ফিকে সবুজ ও গুচ্ছবদ্ধ, বীজ কালো ও উজ্জল। খরা সহিষ্ণু।
৩। লালশাক : খাড়া, দৃঢ় বর্ষজীবি বীরুৎ, ১ মি. পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা উজ্জ্বল লাল ও গাঢ় গোলাপী। পাতা রৈখিক বর্শকলকাকৃতি থেকে গোলাকৃতি হয়। পাতা শীর্ষ প্রায়ই খাঁজকাটা, বোটা ফলক দৈর্ঘ্যের সমান। ফুল গুচ্ছ, লালচে; বীজ · মসুরাকৃতি ও কাল।
৪। বননটে : বর্ষজীবী বীরুৎ, ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে জমিতে আগাছা হিসেবে জন্মে। কাণ্ড ৩০-৬০ সে. মি. লম্বা হয়। পাতার আকৃতি লালশাকের মতো। পাতার বোঁটা ফলকের সমান বা ছোট। ফুল প্রচুর, ঘিয়ে রঙের ও বীজ কালো। বর্ষার শেষে ফুল এবং শীতে ফল হয়। আবাদ করা হলে গাছ রাসালো ও হৃষ্টপুষ্ট হয়। পাতা সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে লালশাকের মতো সুস্বাদু নয়।
বিস্তার : সমগ্র বাংলাদেশ।
ব্যবহার্য অংশ : উঁটা ও শাক।
সাধারণ ব্যবহার : সবজী হিসেবে চাষ হয়।
ঔষধি ব্যবহার :
১) কাঁটানটে রক্ত অর্শ্ব, কাশ, কফ ও মূত্রবৃদ্ধিকারক।
২) কাঁটানটের ক্বাথ প্রদরজনিত শ্বেত, নীল ও কালো বনস্রাব, জরায়ুদুষ্টি ও রক্তপিত্ত প্রশমক।
৩) কাঁটানটের শিকড় চাল ধোয়া পানিতে বেটে স্ত্রীলোককে মাসিকের পর খেতে দিলে সে বন্ধ্যা হয়ে যাবে ।
৪) চার চামচ চাপানটে শিকড়ের রস হালকা গরম পানির সাথে সকালে-বিকালে সেবন করলে নাক দিয়ে পানি ঝরা, গ্যাস্ট্রিক আলসার ও মাথা ব্যথা উপশম হয়। এছাড়া, চাপানটে চূর্ণ নখকুনি জনিত ব্যথা ও পেকে যাওয়া নিবারণ করে।