পেঁয়াজ
পেঁয়াজ
প্রচলিত নাম : পেঁয়াজ
ইংরেজী নাম : Onion
বৈজ্ঞানিক নাম : Allium cepa Linn.
পরিবার : Liliaceae
পরিচিতি : পেঁয়াজ রসুনের মত বর্ষজীবী কন্দাল উদ্ভিদ। তবে রসুনের থেকে তফাৎ হলো যে, পেঁয়াজের রং গোলাপী থেকে খয়েরী এবং একটি পেঁয়াজে মাত্র একটি মাত্র কোয়া হয় যা রসুনের তুলনায় বড়। পেঁয়াজের পাতা ও পুষ্পদণ্ড রসুনের চেয়ে লম্বা। এর একটি ঝাঁঝালো গন্ধ আছে যার জন্য পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে পানি আসে।
বিস্তৃতি : বাংলাদেশের সর্বত্র।
ঔষধি ব্যবহার : আয়ুর্বেদে পেঁয়াজকে সুকন্দক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে ঋষিগণ সুকন্দকের প্রকৃতিগত সত্তার ষৈজাগত শক্তিকেই প্রাধান্য দিয়ে রোগ প্রতিকারে এবং দেহ পোষণের জন্য তাদের উপযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। ছয় রসের একটি রসুনে কম থাকলেও পেঁয়াজে কিন্তু ছয়টি রসই বর্তমান (অম্ল, মধুর, তিক্ত, কষায়, লবণ, কটু)। লোক সংহিতায় পেঁয়াজের ভেষজ গুণ সম্বন্ধে যা বলা হয়েছে তা হল :
১) নাক বন্ধ, কপাল ভার; মনে হয় যেন জ্বর আসছে। এমন হলে পেঁয়াজের রস করে নস্যি টানলে সর্দি বেরিয়ে যাবে এবং জ্বরও সেরে যাবে। সর্দিজনিত মাথাধরা থাকলেও এতে সেরে যাবে।
২) অত্যধিক গরমে যাত্রাপথে পিপাসা পেলে অনেক সময় পানি খাওয়া অসুবিধা। এসব ক্ষেত্রে যাত্রার আগে পেঁয়াজের রস খেলে পানির পিপাসা কম হয়। আবার গরমে বা অন্যকোন কারণে শরীর কষে গেলে প্রস্রাবে জ্বালা-পোড়া হয়। এক্ষেত্রে এক চাচামচ পেঁয়াজের রস ঠাণ্ডা পানিতে মিশিয়ে খেলে ঐ অসুবিধাটা চলে যায়। এছাড়া, গরমে শরীর তেতে গিয়ে অনেকের নাক দিয়ে রক্ত পড়ে, এক্ষেত্রে পেঁয়াজের রস নস্যি নিলে তা বন্ধ হয় ।
৩) হিক্কা উঠলে ২৫/৩০ ফোঁটা রস একটু পানিতে মিশিয়ে ২/৩ বার খেলে বন্ধ হয়। তবে বেশী পরিমাণে খেলে আবার বমি হবে ।
৪) অনেকে প্রস্রাবের বেগ থামাতে পারেন না, তখনই প্রস্রাব করা দরকার হয়, তারা এক চা-চামচ পেঁয়াজের রস কিছুদিন খেয়ে দেখুন উপকার পাবেন।
৫) যাদের পেট পরিস্কার/খোলসা হয়ে পায়খানা হয় না, তারা এক বা দেড় চা-চামচ রস সমপরিমাণ গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে অস্বস্তি কেটে যাবে।
৬) কানে পুঁজ হলে ২/১ ফোটা পেঁয়াজের রস গরম করে কানে দিলে সেরে যায়। বিষ ফোঁড়ায় লাগালে টাটানি সেরে যায়।
৭) কাঁচা পেঁয়াজ খেলে দাঁত ও মুখের অনেক রোগ সারে।
৮) পেঁয়াজের রসের সাথে পানি মিশিয়ে গরু-মহিষের পচা ঘা ধুয়ে দিলে পোকা হয় না।
৯) প্রখ্যাত বাংলাদেশী ভেষজ বিজ্ঞানী ড. আব্দুল গনির মতে পেঁয়াজের রস (ক) ম্যালেরিয়া, বাত, উচ্চ রক্তচাপ, পেট ফাঁপা, মূৰ্ছা যাওয়া ও পোকার কামড়ে ব্যবহার করা হয়। (খ) এটি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং রক্তের Cholesterol কমাতে সাহায্য করে। গ) পেঁয়াজ উত্তেজক ও যৌনশক্তি বর্ধক হিসেবেও কাজ করে।
রাসায়নিক উপাদান : a) Organic Sulphide viz alkylsulphides, allyl propyl disulphide, b) Phenolic constituents viz. catechol, protocatechnic acid c) Amino compounds viz. different amino acids, e) Essential oil.