গাছপালা

পিপুল গাছ বা কর্ন গাছ

প্রচলিত নাম : কর্ন

ইংরেজী নাম : Long Pepper.

বৈজ্ঞানিক নাম : Piper longum Linn.

পরিবার। : Piperaceae

পরিচিতি : পিপুল সুগন্ধিযুক্ত লতানো গাছ, মাটিতে বেয়ে বড় হয়। কখনও অন্য গাছে বেয়ে ওঠে। লতার প্রতি পর্বসন্ধি বা গিট থেকে একটি করে পাতা একান্তরভাবে গজায়। পাতা দেখতে অনেকটা পানের মত। বোঁটা ছাড়া পাতা লম্বায় ৪-৬ সে. মি. এবং চওড়া ২-৪ সে. মি.। পাতার উপরিভাগ ঘন সবুজ এবং নীচের দিকটা হালকা সবুজ। প্রতিটি পর্ব ৭-১৩ সে.মি. লম্বা হতে দেখা যায়। জুলাই-আগস্ট মাসে স্প্যাডিক্স ধরনের একলিঙ্গ ফুল ধরে। পুষ্পদণ্ড ৩-৫ সে.মি. লম্বা হয়। ফুল কুঁড়ি অবস্থায় সবুজ। ফল পাকলে হলুদ ও পরে ধুসর রংয়ের হয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ফল পাকে।

বিস্তৃতি : বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জের আনাচে-কানাচে; বিশেষ করে ছায়াযুক্ত স্যাঁতস্যাঁতে কিন্তু জলমগ্ন নয়, এমন জায়গায় পিপুল ভাল হয়।

বংশ বিস্তার : পুরানো পর্বসন্ধি থেকে শিকড় বের হয়। শিকড়সহ কিছুটা লতা কেটে মাটিতে রোপণ করলে অথবা শিকড় ব্যতীত লতার কিছু অংশ কেটে রোপণ করলেও পর্বসন্ধি থেকে শিকড় বের হয়ে নতুন চারা উৎপন্ন হয়।

ঔষধি ব্যবহার : পিপুল প্রধানত কাজ করে রসবহ স্রোতে । খুব সূক্ষ্ম হয়ে প্রবেশ করতে পারে বলে বেদে এটিকে বলা হয়েছে কর্ণ বা কণা এবং সূক্ষ্মভাবে প্রবেশ করে বিকৃতি রসধাতু পাক করে নেয় এবং সূক্ষা হয়েই তা নির্গত হয়ে যায়। পিপুলই একমাত্র ভেষজ যাকে চরক সংহিতার যুগে সর্বপেক্ষা বেশী অনুশীলন করা হয়েছে।

১) অল্পশ্রমে হাঁপানি আসে, আবার অল্প খেলেও যাদের হাঁপানির কষ্ট হয়, তাদের উচিত খাওয়ার পর ২৫০ মি.লি. পিপুল চূর্ণ পানিসহ খাওয়া। এতে হজমও ভালো হবে এবং হাঁপানির কষ্টও হবে না।

২) বেশী কাশির সাথে যদি ঘুসঘুসে জ্বর থাকে, তবে ক্ষয় রোগের আশংকা করা হয়। এক্ষেত্রে বিশেষ চিকিৎসা শুরু করার আগে ২৫০ মি.গ্রা. পিপুল চূর্ণ কুসুম গরম পানিসহ সকাল বিকাল দুইবার খেলে ৪/৫ দিনের মধ্যেই উপকার পাওয়া যাবে।

৩) শ্লেষ্মা প্রধান বাতরোগে যখন শরীর স্থবির হয়ে যায়, মনে হয় শরীর অচল হয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে ২৫০ মি. গ্রা. পিপুল চূর্ণ ১ চা চামচ গরম আদার রসসহ সকাল বিকাল দুইবার খেলে উপশম হবে।

৪) প্লীহা বৃদ্ধিসহ শরীরে রক্তাল্পতা আহারে অরুচি ও দাস্ত অপরিস্কার হলে কুলে খাড়ার রস ৪/৫ চামচ একটু গরম করে তার সাথে ২৫০ মি. গ্রা. পিপুল চূর্ণ মিশিয়ে এক সপ্তাহ খেলেই এর উপকারীতা টের পাওয়া যাবে।

৫) পূর্বে মেধা ভালই ছিল কিন্তু আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে পিপুল চূর্ণ ১৫০ মি. গ্রা. ২০/২৫ ফোটা ঘিয়ের সাথে মিশিয়ে কিছুদিন খেলে নিশ্চয়ই উপকার পাওয়া যাবে।

৬) গুঁড়া কৃমির উপদ্রব প্রতিদিন বিকালে ২৫৯ মি.গ্রা. পিপুল চূর্ণ পানিসহ খেলে অগ্নিমলও বেড়ে যাবে, সাথে সাথে কৃমির উপদ্রবও কমে যাবে।

৭) যারা বয়সের কারণে বার্ধক্যগ্রস্ত হচ্ছেন এবং তার সাথে শ্লেষ্মর বিকারজনিত রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা ২৫০ মি. গ্রা. পিপুল চূর্ণের সাথে ৩/৪ চামচ বাসক পাতার রস মিশিয়ে নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায় ।

রাসায়নিক উপাদান : 1) Piperine, 2) Piperlonguminine, 3) Piperlangumin, 4) N-Isobutyle, 5) Sesamine, 6) Diaendesmine, 7) I-Undecyl, 8) Piplasterols, 9) Terpinolene; 10)P-eymene, 11) Dihydrocarveol, 12) Thujene, 13) Zingiberene, 14) Caryophyllene, 15) n-Eicosane, 16) Heytane, 17) Hexadecane, 18) Hexeicosque, 19) n one, 22) Phenyl ethyl alcohol

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *