লিভারের ভাইরাস রোগের চিকিৎসা ও সকল পদ্ধতির ডাক্তারদের বক্তব্য।
Liver virus disease treatment and all the methods doctors say.
আমরা সাধারণত ৪টি ভাইরাস নিয়ে চিন্তিত। যা লিভারকে আক্রমণ করে । A, B, C ও E ভাইরাস। এর মধ্যে A ও E ভাইরাস কম ক্ষতিকারক। তবে এই ভাইরাস লিভার ফেলিওর করে মৃত্যু ঘটাতে পারে। যদি তা সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হয়। এই ভাইরাস দুটি পানিবাহিত রোগ। এই রোগ দুটি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সহজ। যত্রতত্র পানি পান বন্ধ রাখা । B ও C ভাইরাস ভয়াবহ রূপ নেয় । এটি রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। শরীরে একবার প্রবেশ করলে নিয়ন্ত্রণ রাখা কষ্টসাধ্য। দিনে দিনে লিভার সিরোসিস হয় এবং লিভার ক্যানসার হয়। তবে এখন প্রতিকার গড়ে উঠেছে। শরীরে রক্ত গ্রহণের পূর্বে রক্ত ভাইরাসমুক্ত কিনা তা দেখে নিতে হবে । যারা ড্রাগে আসক্ত তাদের সিরিঞ্জ ব্যবহার হয় একাধিক ব্যক্তির দেহে। এরা ভয়ঙ্কর। এদের নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য।
A ও E ভাইরাস।
A ও E ভাইরাসের জন্য লিভারে প্রদাহ হলে যা হয় তা হলো জন্ডিস। বমি, খাওয়ার অরুচি ও জন্ডিসের বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। লিভারে প্রচুর ক্ষতি হলে লিভার ফেলিওর হয়। যদি কারো কখনো হেপাটিক কমা হয় তাহলে এ রোগ থেকেই তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে পড়ে।
B ও C ভাইরাস।
B ও C ভাইরাস ভয়াবহ। এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ সহজ নয়। যেমন স্বাভাবিক অবস্থায় একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে কখনো প্রবেশ করে না। তবে রক্তের মাধ্যমে প্রবেশ সহজ। যেমন ধরেন একসময় ছিল যখন রক্তের প্রয়োজন হলে শুধুমাত্র গ্রুপ মিললেই আর কিছু দেখা হতো না। ফলে এই সংক্রমণ খুবই সহজ ছিল। আর বর্তমান সময় এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আর ভাইরাস পরীক্ষা ছাড়া রক্ত দেওয়া হয় না। তাই রক্তের দ্বারা ভাইরাস প্রবেশ প্রায় বন্ধ হয়েছে। তবে ড্রাগ আসক্তদের মধ্যে এই রোগ ছড়ানো খুবই সহজ। তারা না বুঝে একই সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার করে। ফলে ভাইরাস ছড়ায়। এদের প্রতিরোধ করা কঠিন। আমাদের বাল্যকালে গ্রাম ডাক্তারদের দেখতাম তারা প্রচুর ইনজেকশান দিচ্ছেন। একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করেছেন। ফলে সে সময় এর বিস্তার ব্যাপক ছিল। এখন আর এ অবস্থা নেই। এখন ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করা হয় । তাই ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসের ব্যাপকতা কমে এসেছে।
হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস প্রতিরোধ করা সহজ
অপারেশনের পূর্বে রোগীর শরীরে বি ও সি ভাইরাস আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে । রক্ত লাগলে বি ও সি ভাইরাস মুক্ত রক্ত দান করতে পারবে । সি ভাইরাস শরীরে থাকলে আরএনএ পরীক্ষা করে তার চিকিৎসা প্রদান করা হয় । চিকিৎসার সফলতার হার আশানুরূপ । বি ভাইরাসও ক্ষতিকারক ভাইরাস এটিও রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়। একই সূচ একাধিক ব্যক্তির শরীরে যাতে ব্যবহার না হয়। রক্তে বি ভাইরাস থাকলে তা কারো শরীরে না দিলে বি ভাইরাস, মুক্ত থাকা সম্ভব । অনেক সময় মুখের লালা, যৌনমিলন, বাচ্চাকে মায়ের দুধ প্রদান এই ভাইরাস ছড়াতে সহায়ক । বি ও সি ভাইরাস লিভার সিরোসিস করে লিভারে ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।
[videogallery id=”hepatitis-a-e”]
[videogallery id=”liver-virus-harbal”]
লিভারের রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
১। লেবুপানি : নিয়মিত লেবু পানি পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন । লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যেটা যা লিভারকে দূষণমুক্ত করতে সাহায্য করে।
২। গ্রিন-টি : প্রতিদিন কমপক্ষে দুই বার এক কাপ করে গ্রিন-টি পান করুন। এটি লিভার ফাংশন ঠিক করতে যথেষ্ট সহায়তা করে।
৩। অ্যাপেল সিডার ভিনিগার : এক কাপ পরিমান গরম পানি নিয়ে, তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন খাবার আগে পান করুন। মাস কয়েক যাওয়ার পর দেখবেন লিভারে জমে থাকা চর্বি সব গায়েব হয়ে গেছে।
৪। আদাপানি : এক চা চামচ আদা গুঁড়া নিয়ে গরম পানির সাথে মিশিয়ে নিন। তারপর সেটা দিনে দুবার পান করার অভ্যাস করুন।১৫ দিন খেলেই দেখবেন অনেকটা সুস্থ বোধ করছেন। এর কারণ হচ্ছে লিভারে চর্বি জমার প্রক্রিয়াটি এটি প্রায় বন্ধ করে দেয়। ।