গাছপালা

হাড়জোড়া গাছ

প্রচলিত নাম : অস্থিসংহার

ইংরেজী নাম : Large Granadilla

বৈজ্ঞানিক নাম : Cissus quadrangularis Linn.

পরিবার : Vitaceae

পরিচিতি : হাড়জোড়া লতাটি হাড়ভাঙ্গা নামেও পরিচিত তবে নামটি হাড়জোড় হওয়াই যুক্তিসঙ্গত। এটি চারকোণ বিশিষ্ট সবুজ রসালো লতা। ৬-১১ সে. মি. লম্বা পর্ব পরপর জুড়ে শিকড়ে আকৃতি ধারণ করে। প্রতিটি পর্বসন্ধি বা এর এক পাশ হতে একটি পাতা এবং অন্য পাশে হতে একটি আকর্ষি বা tendril গজায়। পাতা হৃদপিণ্ডের মত, বোটাসহ লম্বা ৬-৭ সে.মি. ও চওড়া ৫-৬ সে.মি. এবং ৩-৫ অংশে বিভক্ত। লতার শীর্ষ থেকে এক একটি পর্ব জুড়ে শিকলের ন্যায় হাড়জোড়া বেয়ে চলে। লতা যত বাড়তে থাকে তত গোড়ার থেকে পাতা বা আকর্ষি ঝড়ে পড়ে। ছোট ছোট গুচ্ছাকারে লোমযুক্ত সাদা সাদা ফুল ধরে। পাকা ফল দেখতে লাল ও রসালো এবং আকারে মটর দানার মত।

বিস্তার : বাংলাদেশে সাধারণতঃ সুন্দরবনে এটি প্রাকৃতিকভাবে জন্মে। তবে অন্যান্য এলাকায়ও রোপণ করলে জন্মে। লতানো এই গাছটি পাচিল বা বেড়ার শোভা বর্ধনের জন্য লাগানো যেতে পারে।

বংশ বিস্তার : বীজ থেকে চারা উত্তোলন সম্ভব হলেও পর্বসন্ধিসহ লতার অংশবিশেষ মাটিতে লাগালে সহজেই নতুন গাছ জন্মে। এজন্য হাড়জোড়ার অন্য এক নাম কাণ্ডবল্লী।

ঔষধি ব্যবহার :

১) হাড়জোড়া বা অস্থিসংহার হাড় ভাঙ্গায় অত্যন্ত কার্যকরি। এর ডাটা ও পাতা সমপরিমাণ রসুন ও গুগগুলু একসাথে বেটে গরম করে ভাঙ্গাস্থানে প্রলেপ দিলে জুড়ে যাবে। প্রলেপটি ২/১ দিন পরপর পরিবর্তন করে লাগাতে হবে ।

২) হাড়ভাঙ্গার ফোলা ও ব্যথা সারাতে সমপরিমাণ হাড়ভাঙ্গার উঁটা গন্ধবাদালি ও নিসিন্দা পাতার সাথে অর্ধেক পরিমাণ ধুতুরার পাতা একসাথে বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা দুই-ই চলে যাবে ।

৩) অনিয়মিত ঋতুস্রাবে অর্থাৎ মাসের দিনগুলি এগিয়ে-পিছিয়ে গেলে কচি হাড়জোড়ার ভঁটা কুচি কুটি করে কেটে শুকিয়ে সেই গুঁড়া ২ টিপ পানিসহ দিনে ২ বার কিছুদিন খেলে ওটা স্বাভাবিক হবে ।

৪) উপযুক্ত গুঁড়া সকাল বিকাল ২ বার খেলে শ্বাস রোগেরও উপশম হয়।

৫) কৃমির উপদ্রব হলে উপযুক্ত হাড়জোড়া চূর্ণ ঘিয়ে ভেজে পানিসহ ২/৩ টিপ দিনে ২ বার খেলে এ অসুবিধা চলে যাবে।

৬) কানে পূজ হলে ৫০ গ্রাম সরিষার তেলে ২৫ গ্রাম হাড়জোড়ার ডাটা চাকা চাকা করে কেটে আলুভাজার মত ভেজে ঐ তেলের ২/১ ফোটা করে কানে দিলে ওটা সেরে যাবে।

৭) হাড়জোড়ার লতা ও পাতার এ্যালকোহলীয় নির্যাস উচ্চ রক্তচাপ রোধক ও মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে ।

৮) কচি ভঁটার ভস্ম বদহজম, পেট ফাঁপা ও অন্যান্য পেটের পীড়ায় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

রাসানিক উপাদান : a) Steriods, b) Carotene, c) Ascorbic acid & d) Calcium oxalate, e) Vitamin-C, f) Potassium tartarate, g) Posphates of sodium, potassium, magnissium & calcium.

 

One thought on “হাড়জোড়া গাছ

  1. এহসান says:

    অনেক অনেক ভালো, তবে ছবি থাকলে আরো ভালো হতো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *