ছইলা গাছ
প্রচলিত নাম : ছইলা
ইংরেজী নাম : Chaila
বৈজ্ঞানিক নাম : Sonneratia caseoloris (Linn.) Engl.
পরিবার : Sonneratiaceae
পরিচিতি : সোনেরেশিয়া কেসিওলারিস মাঝারী উচ্চতার (গড় উচ্চতা ১০ মিটার) চিরহরিৎ বৃক্ষ। জোয়ারে প্রভাবাধীন নদীসমূহের উঁচু তীরভূমির মৃদু লবনাক্ত নরম কর্দমাক্ত মাটিতে ভাল জন্মে। পাতার বর্ণ অনুজ্জ্বল কাল। পূর্ন বয়স্ক পাতা ডিম্বাকার থেকে বিডিম্বাকৃতির (দৈর্ঘ্য ৪-৭ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৩ সেন্টিমিটার) মাংসল-লোমহীন প্রতিমূখ এবং খর্বাকৃতির বৃত্তযুক্ত। ফল ক্ষণজীবী শেষ বিকালে ফোটার পর এক রাত টিকে থাকে। একটি বা কয়েকটি ফুল গুচ্ছাকারে অবস্থান করে। অগভীর সবুজ নলাকার বৃতিতে ভেতরের অংশ থেকে অসংখ্য পুংদন্ড বের হয়। এদের উপরের অংশ সাদা ও নীচের অংশ লালচে বর্ণের হয়। ফল সবুজ, মসৃণ এবং দীর্ঘস্থায়ী বৃতিযুক্ত। গর্ভপত্রের (অমরা) মাংসল খণ্ডে প্রচুর বীজ থাকে। অঙ্কুরোদগম মৃৎভেদী। ছাইলার ভূনিম্নস্থ সমান্তারাল মূল থেকে খাড়া শ্বাসমূল বের হয়।
ছইলা কেওড়া গাছের মতো উপকূলীয় চরাঞ্চলে ও সুন্দরবনে জন্মে। উপকূলীয় বনায়নে ছাইলা গাছ যদিও রোপণ করা হয় না কিন্তু অধিকাংশ পুরাতন বাগানে প্রাকৃতিকভাবে এ গাছ জন্মে থাকে। উপকূলীয় চরাঞ্চলে কেওড়ার পাশাপাশি ছইলার বাগান সৃজনের সুযোগ আছে। সাম্প্রতিককালে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে উপকূলীয় বনায়নে কেওড়া বাগানে কাণ্ডছিদ্রক পোকার আক্রমণ হলেও ছইলার বাগানে কোন কাণ্ডছিদ্রক পোকার আক্রমণ দেখা যায় না। তাই কেওড়ার বিকল্প হিসেবে ছইলার বাগান সৃজনের সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে বলে অনেকের ধারণা।
বীজ সংগ্রহ : ছইলার ফল সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে পাকে। ফল গোলাকার সবুজ বর্ণের হয়। পাকলে হলুদাভ হয়। ১০-১২টি ফলে প্রায় ১ কেজি ওজন হয়। একটি ফলে ৫০০-২৫০০টি বীজ হয়। ফল গাছে চড়ে সংগ্রহ করা হয়। ফল থেকে বীজ সংগ্রহ পদ্ধতি কেওড়ার অনুরূপ।
সাধারণ ব্যবহার : কাঠ জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।