চোখে ছানি পড়ার চিকিৎসা ও সকল পদ্ধতির ডাক্তারদের বক্তব্য।
কাটার্যাক্ট বা চোখের ছানি
পৃথিবীতে অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ চোখে ছানি ক্যাটার্যাক্ট (cataract)। চোখের লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে যাওয়াই চোখের ছানি। চোখে ছানি হলে প্রথমে রোগী চোখে ঝাপসা দেখে এবং ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি সম্পূর্ণ লোপ পায়। চোখে ছানি হলে দ্রুত একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। চোখে ছানি পড়ার চিকিৎসা এবং বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
ছানি তিন ধরনের হয়।
১। নিউক্লিয়ার
২। কর্টিক্যাল ও
৩। সাব ক্যাপসুলার।
চোখের ছানি কেন হয়?
১। চোখে ছানি পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে ধীরে ধীরে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে লেন্সের উপাদান প্রোটিনের গঠন নষ্ট হয়ে যাওয়া ;
২। অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস ;
৩। বংশগত ;
৪। দীর্ঘমেয়াদী চোখের ইনফেকশন থাকা ;
৫। দীর্ঘদিন স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহার ;
৬। মাদকাসক্তি ;
৭। অতিরিক্ত সূর্যের তাপ অথবা অতিবেগুনি রশ্মিতে কাজ করার অভ্যাস থাকা ;
৮। চোখে আঘাত পাওয়া ;
৯। ভিটামিনের ঘাটতি। ইত্যাদি।
চোখের ছানি পড়ার লক্ষণ
১। ছানি পড়লে চোখে ঝাপসা দেখবে এটা সাধারণ লক্ষণ ;
২। এছাড়া চোখে ছানি পড়লে রঙ বিবর্ণ দেখা এবং সেই সাথে রঙের চারপাশে বলয় দেখতে পাওয়া ;
৩। উজ্জ্বল আলোতে সমস্যা হওয়া ;
৪। প্রধানত রাতের বেলায় দেখতে বেশি সমস্যা হতে পারে ;
৫। আর একটি বিশেষ লক্ষণ, অনেক সময় চোখের সামনে কালো কিছু নড়াচড়া করা বা সরে সরে যাচ্ছে দেখা ;
৬। লেন্সের রং ঘোলা হয়ে যাওয়া ;
৭। একটি জিনিস দুইটি দেখা ;
৮। রঙের বোধ কমে যাওয়া।
ছানি অপারেশনের পর সতর্কতা
১। অবশ্যই কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে ;
২। ডাক্তার কাছে দেখার জন্যে চশমা দিলে তা নিয়ম মাপিক ব্যবহার করতে হবে ;
৩। কমপক্ষে ৭ দিন চোখে সরাসরি পানি দেয়া যাবে না ;
৪। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে ;
৫। যেকোন অসুবিধা হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে ।
চোখে ছানি পড়ার চিকিৎসা পেতে অনলাইনে আমাদের অবিজ্ঞ দাক্তারদের থেকে পরামর্শ নেয়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন এপয়েন্টমেন্ট
[videogallery id=”cataract-alo”]
[videogallery id=”cataract-homeo”]
[videogallery id=”cataract-harbal”]
চোখের ছানি দূর করার ঘরোয়া উপায়ঃ
১। ভিটামিন সিঃ চোখের লেন্স সাধারণত শরীরের অন্যান্য অঙ্গের চেয়ে ভিটামিন সি বেশি ধারণ করে । যদি আপনার চোখে ছানি (প্রাথমিক পর্যায়ে) হয়ে থাকে তাহলে চক্ষু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী সম্পূরক ভিটামিন সি গ্রহণ করুন।
২। পেঁপেঃ পেঁপের মধ্যে থাকা এনজাইম প্রোটিন জাতীয় খাবার হজমে সহায়তা করে। চোখে ছানি আছে এমন ব্যক্তির পেঁপে খাওয়া উচিত । নইলে অতিরিক্ত প্রোটিন চোখের লেন্স-এ গিয়ে জমা হয় এবং ছানি তৈরি করে।
৩। রসুনঃ চোখের ছানির জন্য রসুন খুবই উপকারী একটি জিনিস। চোখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে দৃষ্টি যে রকম পরিষ্কার মনে হয় সেরকমভাবে রসুনও ঠিক সেই কাজটি করে থাকে। প্রতিদিন ২-৩ কোয়া রসুন খেতে পারলে চোখের অনেক উপকার পাওয়া যাবে।
৪। গ্রিন টিঃ চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য গ্রিন টি চমৎকার কাজ করে। এতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা চোখকে সজীবতা প্রদান করতে সাহায্য করে।
৫। দুধ ও কাজুবাদামঃ চোখে ছানি হলে চোখ জ্বালা করে এবং লাল হয়ে যায়। এক্ষেত্রে চোখ জ্বালা পোড়া বন্ধ করার জন্য দুধের মধ্যে সারারাত কাজুবাদাম ভিজিয়ে রেখে সেই দুধ চোখের পাতায় লাগাতে হবে। তাহলে অনেকটাই কমে যায়।
৬। গম ঘাসঃ এটি প্রকৃতপক্ষে গমের কচি চারা যা আপনার চোখের ছানি দূর করতে সক্ষম। এজন্য চোখের ছানি দূর করতে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই গম ঘাসের জুস রাখুন ।
৭। শাকঃ শাক এর মধ্যে বিটা ক্যারোটিন ও এন্টিওক্সিডেন্ট রয়েছে যা চোখের ছানি প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন তাজা শাক খান।
৮। কাঁচা শাক-সবজিঃ মেডিকেল জার্নাল এর তথ্য অনুসারে কাঁচা শাক-সবজি হল ভিটামিন এ এর উৎস। তাছাড়া এগুলো বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা চোখের ছানি প্রতিরোধে যথেষ্ট সাহায্য করে।