গাছপালা

গোলমরিচ গাছ

প্রচলিত নাম : গোল মরিচ

ইংরেজী নাম : Black Pepper

বৈজ্ঞানিক নাম: Piper nigrum Linn.

পরিবার : Piperaceae

পরিচিতি : গোলমরিচ একটি আংশিক পরজীবী লতানো গুল্ম । ঘনসবুজ শক্ত ও কাষ্ঠাল লতানো গুল্ম। লতার পর্বসন্ধি থেকে একটি করে পাতা গজায়। পত্রবৃন্ত লম্বায় ২-৩ সে. মি. হয় এবং পাতা ১০-১৫ সে. মি. লম্বা ও ৫-৯ সে. মি. চওড়া হয়। পাতার উপরিভাগের রং ঘন সবুজ হলেও নীচের দিকটা অনেকটা সাদাটে। সাধারণতঃ কোন বড় গাছ যেমন: আম, জাম ও কাঁঠাল গাছে তুলে দিলে গোলমরিচ গাছ সতেজ হয় ও ফলন বেশী হয়। উল্লেখ্য যে, গোলমরিচ আশ্রয়ী গাছের কাণ্ড বা ডালে বেয়ে থাকে। গাছের শীর্ষে উঠে কুঁড়ি বা অমুকুল ছাপিয়ে আশ্রয়ী গাছের কোন ক্ষতি করে না। আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে পাতার বোঁটার গোড়া থেকে লম্বা পুষ্পদণ্ডে স্প্যাডিক্স ধরনের ফুল ধরে ও জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী মাসে মোটর দানার মত গোলাকৃতির ফল পাকে। কাঁচা ফল গাঢ় সবুজ ও পাকা ফল গাঢ় লাল বা কালচে বর্ণের হয়। বোঁটাসহ এটি ৯-১৫ সে. মি. লম্বা। দণ্ডের চারিদিকে ফলগুলি ঘন হয়ে একটির গায়ে অন্যটি লাগানো অবস্থায় থাকে । গোলমরিচ ওষুধি হিসেবে না হলেও মসলা হিসেবে আমাদের দেশে অত্যন্ত পরিচিত। কোন মজাদার রান্না গোলমরিচ ছাড়া চিন্তা করা যায় না। এটি গুরুপাক খাবারকে সহজপাচ্য করে এর স্বাদও বাড়িয়ে দেয়।

বিস্তৃতি : বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পাহাড়ী এলাকায় গোলমরিচের বাণিজ্যিক খামার রয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও এটি চাষ করা সম্ভব।

বংশ বিস্তার : বীজ থেকে বা অঙ্গজভাবে গোলমরিচ বংশ বিস্তার সম্ভব। তবে অঙ্গজ বংশ বিস্তার সহজ। এটি চাষে বিশেষ কোন মূলধন প্রয়োজন নেই। কিন্তু চাহিদা রয়েছে প্রচুর। তাই বাণিজ্যিকভিত্তিতে গোলমরিচ চাষ লাভজনক হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।

ওষুধি ব্যবহার : এই ভেষজটির কেবল ফলই ওষুধার্থে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য ব্যবহার নিম্নরূপ:

১) কৃমিতে ছোট ছেলেমেয়েদের পেটের উপরিভাগ মোচড়ানো ব্যথা হলে এবং মুখে পানি না এলে, ৫০ মি. গ্রা. গোলমরিচের গুঁড়া সামান্য দুধে মিশিয়ে সকাল-বিকাল খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যায় ।

২) ঠাণ্ডা লেগে গলায় ব্যথা হলে এক চামচ গোলমরিচের গুঁড়ার সাথে অল্প লবণ মিশিয়ে একটু একটু করে চেটে খেলে গলা ছেড়ে যায় ও ব্যথার উপশম হয়।

৩) রক্তচন্দন ও গোলমরিচের গুঁড়া পিষে ফেঁড়ায় লাগালে একদিনেই তা ফেটে যাবে ।

৪) আবার বেলপাতার সাথে ৩/৪টি গোলমরিচ ফোড়ার উপর লাগালে একদিনেই তা ফেটে যাবে ।

৫) এছাড়া অর্শ, বদহজম, কলেরা ও উত্তেজক হিসেবে এর ব্যবহার রয়েছে।

৬) পেটে বায়ু ও খেতে অরুচি হলে শুকনো ফুল ও গোলমরিচের গুঁড়ার সাথে সৈন্ধব লবণ ও চিনি মিশিয়ে মাঝে মাঝে চেটে খেলে।

পেটের বায়ু কমবে এবং অরুচি সেরে যায়।

৭) অনেক সময় মহিলাদের কোমরে যন্ত্রণা ও স্তনেও ব্যথা হয় কিন্তু মাসিক হয় না। এক্ষেত্রে ২৫০ মি. গ্রা. উলটকম্বলের ছালের চূর্ণের সাথে দুই টিপ পরিমাণ গোলমরিচের গুড়া মিশিয়ে প্রতিদিন একবার পানিতে মিশিয়ে খেলে মাসিক হয়ে যাবে।

৮) আবার অনেকের মাসিক হলেও খুবই কম, রক্তের রং কাল ও চাকা চাকা এবং তলপেটে খুব যন্ত্রণা হয়। এ অবস্থায় উপরের ভেষজটি মাসিক হওয়ার ৪/৫ দিন আগে থেকে প্রতিদিন একবার করে খেতে হবে। এভাবে মাসিক চলাকালীন ৪/৫ মাস খেলে এ অসুবিধা দূর হবে।

৯) সর্দি, জ্বরে গোলমরিচ উপকারী

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *