গাছপালা

গোলাপ ফুল

প্রচলিত নাম : গোলাপ

ইংরেজী নাম : Rose.

বৈজ্ঞানিক নাম: Rosa damacena Mill.

পরিবার : Rosaceae

পরিচিতি : ঝোপ জাতীয় ফুল গাছের মধ্যে গোলাপ একটি সুন্দর ফুল। গোলাপকে ফুলের রাণীও বলা হয়। গোলাপ বিভিন্ন জাতের হয়ে, থাকে। গোলাপের পাতা সাধারণতঃ সরল এবং সপ্রতিসম হয়। সাধারণতঃ বিভিন্ন রং-এর এবং বিভিন্ন প্রকারের গোলাপ ফুল দেখা যায়। সাধারণতঃ অনেক পাঁপড়ি নিয়ে এ ফুল গঠিত। ফুলের পাপড়িগুলি সুগন্ধিযুক্ত হওয়ায় এই ফুলে বিভিন্ন রকম প্রজাপতি এবং বিভিন্ন কীটপতঙ্গ বসে। এ গাছ সাধারণতঃ কাঁটাযুক্ত হয়।

বিস্তৃতি : বাংলাদেশের সর্বত্র।

ব্যবহার্য অংশ : ফুলের পাপড়ি

চাষাবাদ : অক্টোবর হইতে জানুয়ারী গোলাপের চারা রোপণের জন্য উপযুক্ত সময়। গোলাপে কোন রকম বীজ হয় না বলে গোলাপ জোড়া কলম, চোখ কলম, শাখা কলম ও দাবা কলমের সাহায্যে বিস্তার লাভ করতে পারে। তবে এদের মধ্যে জোড়া কলম ব্যবহার সর্বোত্তম পন্থা। ভিন্ন ভিন্ন গোলাপ গাছ রোপণের জন্য বিভিন্ন দূরত্ব প্রয়োজন। তবে সাধারণতঃ রোপণের জন্য গর্ত ১ ফুট x ১ ফুট x ১ ফুট গভীর হওয়া উচিত। নিচের অর্ধেক মাটির সাথে প্রায় ৭ কেজি পচা গোবর সার , ০.৫ কেজি ছাই ও ০.২৫ কেজি হাড়ের গুঁড়া ও ট্রিপল সুপার ফসফেট উত্তমরূপে মিশ্রিত করে দিতে হবে। উপরের অর্ধেক মাটির সাথে কম্পোষ্ট সার মেশানো ভাল। গোলাপের জন্য অন্যান্য সারের মধ্যে খৈল, পোড়ামাটি ইত্যাদিও ব্যবহার্য।  রোপণের পর ঘনঘন, সপ্তাহে অন্তত একবার ভালভাবে পানি সেচ দিতে হবে । এক সম্পাহে একবার নিড়ানী দিলে ভাল ফল পাওয়া যাবে। বছরেও একবার অক্টোবরের শেষের দিকে অথবা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গোলাপের শাখা-প্রশাখা ছাঁটাই করে দেয়া উত্তম। ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করবার জন্য শাখা-প্রশাখা উপরের দিকের অংশ ঘেঁটে ফেললে ভাল ফল পাওয়া যায়।

ঔষধি ব্যবহার : গোলাপের পাপড়ি সাধারণতঃ গোলাপ পানি তৈরী এবং আতর তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। ফুলের বৃন্ত হৃদযন্ত্রের সমস্যায় টনিক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। গোলাপের পাপড়ি হতে গুলকন্দ বানানো হয় যা লেক্সটিভ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এবং এই গুলকন্দ টনসীল উপশমে ব্যবহার করা হয়। গোলাপ পানি বিভিন্ন প্রকার ঔষধে ব্যবহার করা হয় । গোলাপের পাপড়ি হতে নির্যাসিত এবং নিষ্কাশিত তৈল সুগন্ধি ও ঔষধ তৈরীতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।

সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পদ্ধতি : গোলাপের পাপড়ি সংগ্রহ করে প্রথমে রৌদ্রে শুকিয়ে নিতে হবে। রৌদ্রে শুকানোর সময় পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে যাতে ধুলাবালি না পড়ে। শতকরা ২ ভাগ আদ্রর্তা থাকা অবস্থায় এদের প্যাকেট করে নিতে হবে। গোলাপের ক্ষেত্রে শংকর (Hybrid) জাত ছাড়া দেশী গোলাপের চাহিদা বেশী। কারণ দেশী গোলাপ ফুল সুগন্ধী। সংরক্ষণের সময় শুকনো পাপড়ি ভেঙ্গে মচমচে হওয়ার পূর্বেই প্যাকেজিং করতে হবে। তবে আর্দ্রতা বেশী থাকলে তা পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

বাজারজাতকরণ : বর্তমানে হামদর্দ, সাধনা, শক্তি, ইউনানী, এপি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়ভাবে গোলাপের পাপড়ি ক্রয় করে থাকেন। তবে তা অত্যন্ত অপর্যাপ্ত বিধায় স্থানীয় নার্সারীসমূহ এবং বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *