গাছপালা

বকফুল

প্রচলিত নাম : বকফুল

ইংরেজী নাম : Bakful

বৈজ্ঞানিক নাম : Sesbania grandiflora Pers.

পরিবার : Leguminosae

পরিচিতি : ইহা ক্ষুদ্র আকারের বৃক্ষ, লাল কিংবা সাদা ফুল বহন করে থাকে। যখন ইহা মাত্র ৪/৫ ফুট উচ্চ থাকে তখন দেখতে বড় মনোহর হয়।

বিস্তৃতি : বাংলাদেশের সর্বত্র গ্রামের বসতবাড়ির আশেপাশে লাগানো হয়।

ফুল ফোটর সময় : সেপ্টেম্বর-নভেম্বর।

চাষাবাদ : বীজ হতে চারা জন্মে। এক বৎসর বয়সকাল হতেই ফুল দেখা দেয়।

ঔষধি ব্যবহার :

১. বুকে সর্দি : বসে গিয়ে হাঁসফাস করছে, পাশ ফিরতে কষ্ট, নি:শ্বাস-প্রশ্বাসেও কষ্ট, মনে হবে নিউমোনিয়া, কিন্তু যদি চিকিৎসক মনে করেন এই সর্দিটা উঠে গেলে অসুবিধাটা চলে যায়, সেক্ষেত্রে বকফুলের রস ১ চা চামচ করে ২/৩ ঘন্টা বাদে দুই/তিন বার খাওয়ালে সর্দিটা তরল হয়ে উঠে যাবে। এখানে কিন্তু একটা সমস্যা থেকে যাচ্ছে কারণ বারোমাসই তো বকফুল পাওয়া যায় না, সেক্ষেত্রে ঐ গাছের পাতার রস করে, তাকে একটু গরম করে ২ চা চামচ করে দুই/তিন ঘন্টা বাদে দুই-তিনবার খাওয়াবেন। এর দ্বারা একই রকম কাজ হবে।

২. প্রতিশ্যায়ে (নেজাল এলার্জিতে) : কথা নেই বার্তা নেই, কারণও কিছু হয়েছে এমনও নজরে আসছে না অথবা মনেও পড়ছে না সেক্ষেত্রে দশ বিশটা হাঁচি আর নাক দিয়ে সড়সড় করে কাঁচা জল গড়াতে লাগলো, সেক্ষেত্রে বকফুল গাছের পাতার রস ২ চা চামচ একটু গরম করে খাওয়া, আর দুই/এক ফোঁটা নাকে টানা; এর দ্বারা ঐ অসুবিধেটা চলে যাবে। প্রচীন বৈদ্যদের কাছে এটা ছিল এন্টি হিস্টামিনিক ড্রাগ।

৩. ঘুসঘুসে জ্বরে : একটু একটু জ্বর কিছুতেই যাচ্ছে না সেক্ষেত্রে বকফুল গাছের ছাল ৫/৬ গ্রাম, হরিতকী ৫/৬ গ্রাম একসঙ্গে ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে, হেঁকে সকালে একবার খেতে হবে। তবে একটা কথা, যদি এর সঙ্গে ৫ গ্রাম গোর বীজ এর সঙ্গে সিদ্ধ করে ঐ ক্বাথটা করা যায় তো আরও ভাল হয়।

৪. বসন্তে : লাট খেয়ে গিয়েছে, উঠছে না অথবা গুটি বেরুতে দেরী হচ্ছে, এক্ষেত্রে বকফুলের রস ১ চা-চামচ একটু গরম করে দিনে দুই/তিনবার খাওয়ালে ঐ বসন্তের গুটিগুলি বেরিয়ে যায়।

৫. শরীরে ব্যথা ও যন্ত্রণায় : সাধারণতঃ অল্প অল্প ঠাণ্ডা আবহাওয়া (আশ্বিন-কার্তিক মাসে) অথচ জলো হাওয়া যায়নি, এই সময় শরীরে পিত্ত-শ্লেষ্মা বিকারজনিত কারণে এটা আসে। এক্ষেত্রে কয়েকটি আধ ফোটা বকফুলকে নিয়ে থেঁতো করে সেই রস এক চা-চামচ করে দিনে ২/৩ বার খেতে দিলে শরীর ঝরঝরে হয়ে যায়।

৬. মাসিক ঋতুর অতি বা অল্প স্রাবে : এই রোগে যারা ভুগছেন তাদের চেহারা সাধারণতঃ একটু স্কুল হতে দেখা যায়, বিশেষ করে শরীরের মাঝের অংশটা। এদের স্রাবে থাকে দুর্গন্ধ ও মাজায় ব্যথা। এই ক্ষেত্রে বকফুলের রস প্রত্যহ ২/৩ চা-চামচ করে সকালে ও বিকালে দুইবার খেতে হয়। এর দ্বারা ঐ অসুবিধেটা চলে যায়।

৭. শুস্ক কাঁসিতে : শ্লেষ্মা শুকিয়ে গিয়েছে, উঠছে না, কাশতে কাশতে বুক-পিঠ ব্যথা হয়ে গেল, এক্ষেত্রে অন্ততঃ ২/৩টি করে বকফুল ঘিয়ে ভেজে প্রত্যহ খেতে হবে। এর দ্বারা বক্রবায়ু সর্দিকে শুকিয়ে দিয়ে যে কাঁশির সৃষ্টি করেছিল, এই বকফুল ঐ বক্রতাকে (বায়ুকে) সোজা ও সরল করে কাশিকে কমিয়ে দেবে।

৮. গুলের ব্যথায় : খুবই কষ্ট হচ্ছে, এক্ষেত্রে ৪/৫টি ফুল ঘিয়ে ভেজে খেতে দিলে সাময়িক উপশম হবে।

সাধারণ ব্যবহার : শোভা বর্ধনকারী গাছ হিসাবে বাগানে, রাস্তার ধারে লাগানো হয়। কাঠ নির্মাণ কাজ ও খুঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *