নাক কান গলা রোগ, নিরাপদ চিকিৎসা, শ্বাসতন্ত্রের রোগ

শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা ও সকল পদ্ধতির ডাক্তারদের বক্তব্য

Treatment of asthma, and the statements of doctors of all methods.

শ্বাস কষ্ট কি?

ডিজনিয়া (dyspnea) বা শ্বাসকষ্ট (asthma) হলো এমন একটি ক্লিনিক্যাল (চিকিৎসাযযাগ্য) অবস্থা যার বৈশিষ্ট্য হলো শ্বাস-প্রশ্বাসের হ্রাস্যতা (সর্টনেস অব ব্রেথ) বা শ্বাস নিতে কষ্ট, ন্দ্রিালুতা কখনো কখনো অচৈত্যনতা। এমতাবস্থায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।

শ্বাসকষ্ট কেন হয়ঃ 

  • শ্বাসপথের প্রতিবন্ধকতায
  • পালমোনারী ডিজফাংকশন (ফুসফুসের বৈকল্য); যেমন- এজমা, সি ও পিডি, নিউমোনিয়া, এ আর ডি এস, নিউমোথোরাক্স ইত্যাদির
  • সেরেব্রোভাসকুলার এক্সিডেন্ট (মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ)।
  • কার্ডিয়াক ডিজফাংকশন (হৃদপিন্ডের বৈকল্য); যেমন- সি সি এফ,এরিদমিয়া ইত্যাদি়
  • আঘাত; যেমন- বুকে আঘাতা
  • বিষক্রিয়া; যেমন-বিষাক্ত গ্যাস আঘ্রাণ (নিঃশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণম

 

বৈশিষ্ট্যর লক্ষণঃ

  • এর রোগী নিম্নলিখিত উপস্থাপনা থাকতে পারে
  • অস্বাভাবিক ভাবে (দ্রুত) বুকের উঠানামাব *
  • কাশি
  • শ্বাসের সাথে বুকের ভেতর অস্বাভাবিক শব্দ হওয়া
  • দুর্বলতা, চেতনা হ্রাস পাওয়া বা ঘুম ঘুম ভাব
  • ঠোট, আঙ্গুল এবং নখের নীলবর্ণ ধারণ (অর্থাৎ সায়ানোসিস)। ইত্যাদি

 

চিকিৎসা নির্দেশনাঃ

সাধারণ ব্যবস্থাপনা: আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট বেশি হলে-

১. আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটি শক্ত সমতল পৃষ্ঠে শুইয়ে দিতে হবে।

২. আক্রান্ত ব্যক্তির ভাইটাল সাইন (শ্বাসপ্রশ্বাস, পালস ও তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে)

৩. আঁটোসাটো কাপড় থাকলে তা ঢিলাঢালা করতে হবে।

৪. আক্রান্ত ব্যক্তিকে শান্তনা দিতে হবে।

৫. আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনপ্রকার খাবার বা পানীয় দেয়া যাবে না ।

৬. শ্বাস পথ খোলা রাখতে হবে। এজন্য আক্রান্ত ব্যক্তির ঘাড় সামান্য পেছনদিকে বাঁকিয়ে থুতনি উঁচু করে দিতে হবে। (মুখ ভোলা থাকবে)।

৭. আক্রান্ত ব্যক্তিকে এমনভাবে শোয়াতে হবে যেন পা মাথা হতে উপরের  দিকে থাকে। এজন্য পায়ের নিচে উঁচু কিছু যেমন বালিশ দেয়া যেতে পারে।

৮. আক্রান্ত ব্যক্তির মাথার নিচে কোন বালিশ দেয়া যাবেনা। কারণ এতে শ্বাসপথে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তবে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কে পিঠে হেলান দিয়ে বসানো যেতে পারে (এতে যদি রোগী ভাল অনুভব করে)।

 

আমাদের অবিজ্ঞ দাক্তারদের থেকে পরামর্শ নিতে এখানে ক্লিক করুন  এপয়েন্টমেন্ট

[videogallery id=”asthma-alo”]

 

শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধ (শিক্ষার্থীদের জন্য)

চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ সেবন নিষিদ্ধ

১) তাৎক্ষনিক করনীয় (বুকের মাঝে সাঁই সাঁই শব্দ থাকলে )

  • নেবুলাইজেশন: সালবিউটামল নেবুলাইজার সলুশন দ্বারানেবুলাইজেশন। একক মাত্রা বিশিষ্ট ঔষধ ( ইনসেপটা- উইন্ডেল প্লাস) ব্যবহার করা উত্তম। একক মাত্রা এক বার। এতে উন্নতি না হলে হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
  • ইনহেলার: নেবুলাইজার না করা গেলে স্পেসার দ্বারা সালবিউটামল ইনহেলার প্রদান করতে হবে
    • ভলুমেট্রিক স্পেসার ব্যবহার: দুই পাফ দিয়ে ১ মিনিট স্পেসারব্যবহার । এভাবে দুই বার।
    • স্পেসার না পাওয়া গেলে সালবিউটামল ইনহেলার সরাসারি ।এক পাফ নিয়ে ১ মিনিট পর ২য় পাফ।

 

২) পরবর্তীতে করনীয় (অল্প স্বল্প মাত্রার শ্বাসকষ্ট থাকলে এবং বুকের মাঝে সাঁই সাঁই শব্দ থাকলে) স্বল্পমেয়াদী চিকিৎসা হিসেবে

) স্বল্পমেয়াদী ব্রংকোডাইলেটর

জেনেরিক: সালবিউটামল (salbutamol)

ব্রান্ড- ব্রডিল (Brodil), প্রস্তুতকারক: এ.সি.আই।

ডোজ : সচরাচর ডোজ (মুখে)।

  • প্রাপ্ত বয়স্ক : ২-৪ মিগ্রা দিনে ৩-৪ বার ।
  • শিশু : ২ বছর বয়সের নিচে: প্রযোজ্য নয়ে ২-৬ বছর : ১-২ মিগ্রা হিসেবে দিনে ৩-৪ চার । ৬-১২ বছর : ২ মিগ্রা ৩-৪ বার দিনে।

ইনহেলার : উপশমের জন্য ১-২ পাফ তাৎক্ষণিক।

) এজমা প্রতিরোধক। 

জেনেরিক: কিটোটিফেন (ketotifen)।

ব্রান্ড- টোফেন (Tofen) ।

ডোজ:

  • প্রাপ্ত বয়স্ক : ট্যাবলেট: ১-২ মিগ্রা- দিনে ১-২ বার।
  • শিশু ৩-১১ বছর: ১ মিগ্রা- দিনে ১-২ বার। ।
  • শিশু- ৬ মাস থেকে ৩ বছর : ০.৫ মিগ্রা দিনে ২ বার।

যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

[videogallery id=”asthma-harbal”]

 

 

শ্বাসকষ্টের ঘরোয়া চিকিৎসা:

১। ঠান্ডায় ভোগার ফলে যদি শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় তাহলে এটি ফুসফুসে শ্লেষ্মার জমে থাকার কারণে হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে শ্লেষ্মা দূর করতে হবে এবং তার জন্য গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। 

২। অধিকাংশ ডাক্তার রা মত পোষণ করেন যে, শীতল বাতাস শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে অনেক সাহায্য করে । খুব অস্বস্তি বোধ করলে এবং শ্বাস নিতে যদি অসুবিধা হয় তাহলে কোনো ফ্যানের কাছে বসুন।  

৩। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে সবসময় সামনের দিকে ঝুঁকে বসতে হবে। এটি করলে শরীর অনেক রিলাক্স হয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে খুব সুবিধা হয়।  

৪। আদা’র মধ্যে বিশেষ কিছু উপকারি উপাদান রয়েছে। যেগুলো শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। যার কারনে শ্বাসনালীতে অক্সিজেনের প্রবেশ ঠিকমতো ঘটে থাকে । তখন স্বাভাবিকভাবেই শ্বাসকষ্ট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। 

৫। সরিষা হচ্ছে আরেকটি উপদান যা শ্বাসকষ্ট কমাতে দারুণ উপকারি। শ্বাসকষ্ট হওয়ার সাথে সাথে অল্প পরিমানে সরষের তেল গরম করে বুকে-পিঠে ভাল করে মালিশ করতে থাকবেন। এই তেলটি সাধারণত রেসপিরেটারি প্যাসেজকে খুলে দেয়। ফলে শ্বাসকষ্ট আস্তে আস্তে কমতে শুরু করে।

৬। দুধের মধ্যে অল্প পরিমানে রসুন দিয়ে ভালো করে দুধ টা ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর দুধ টা খেয়ে ফেলতে হবে রোগীকে । এর ফলে ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট কমতে শুরু করবে। 

৭। অ্যাজমা কমাতে কফি দারুণ উপকারি । গরম গরম এক কাপ কফি খেলে শ্বাসনালী দ্রুততার সাথে খুলে যায় । এর ফলে অক্সিজেন খুব ভালোভাবেই ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। তবে একটা কথা মনে রাখবেন, ৩ কাপের বেশি কফি কিন্তু ভুলেও খাবেন না। কারণ এটি যতটা উপকারি, মাত্রা অতিরিক্ত গ্রহণ শরীরের পক্ষে ঠিক ততটাই ক্ষতিকর।

৮। অ্যাজমার চিকিৎসায় আরেকটি জিনিস যুগ যুগ ধরে ব্যাবহার হয়ে আসছে । তা হল মধু। এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ করে মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার করে পান করলে ভালো উপকার পাবেন।

৯। কাঁচা পেঁয়াজে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এটি শ্বাসনালীর প্রদাহ কমিয়ে অ্যাজমার প্রকোপ ধীরে ধীরে কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *