প্রচলিত নাম : ভৃঙ্গরাজ
ইংরেজী নাম : Vringaraj
বৈজ্ঞানিক নাম : Eclipta alba Linn.
পরিবার : Anacardiaceae
পরিচিতি : ভৃঙ্গরাজ একটি ছোট গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। স্থানভেদে কখনও ভুলুণ্ঠিত হয়। এটির ফুল হলুদ হয়। ভূঙ্গরাজের আরও তিনটি প্রজাতি লক্ষ্য করা যায়। একটির ফুল নীল, একটির সাদা এবং অন্যটির ডাঁটা একটু লালচে, ৩.৪ সে.মি. থেকে ৯.৫ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। উঁটা রসালো, নরম, সূক্ষ্ম লোমশ ও দ্রুত বাড়ে। বর্ষাকালে হলুদ রংয়ের ফুল হয় এবং শরকালে ফল হয়। এর ডাঁটার গিরা থেকে পাতা বের হয়। পাতা ৪.০-৮.০ সে.মি. লম্বা এবং ১.২-২.০ সে.মি. পর্যন্ত চওড়া হয়। পাতার কিনারা হালকা খাঁজকাটা। উঁটার প্রতি গিরা থেকে দুটি করে পাতা বিপরীতমূখী হয়ে গজায়। পাতার আকৃতি লম্বাটে বর্ষাকৃতি, অমসৃণ ও খসখসে।
বিস্তৃতি : বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র এ তৃণটি দেখা যায়। তবে ভিজা বা আর্দ্র জায়গা এর জন্য বিশেষ উপযুক্ত।
বংশ বিস্তার : ভৃঙ্গরাজের চাষ করা খুবই সহজ। এর অঙ্গজ জননই সহজ। তাই শিকড়সহ বা শিকড় ছাড়া লতা লাগালেই নতুন গাছ জন্মে। তবে এটির যত্ন নিতে হয়।
ঔষধি ব্যবহার : এই ভেষজটি কটুক্তি ও হালকা কষস্বাদযুক্ত করে। ফলে স্বাভাবিকভাবে এটি পিত্ত ও শ্লেষ্মা, বিকার, কফের উপর ভাল কাজ করে।
১) সূর্যোদয়ের পর অনেকের মাথায় যন্ত্রণা হয় (শিরঃরোগ) বা আধকপালে ব্যথা হয় (সাইনোসাইটিস); সেক্ষেত্রে ভৃঙ্গরাজের পাতা গুগার নস্য নিলে বা পাতার রস মাথায় মাখলে উপশম হয়।
২) মাথার চুল ওঠায় এই পাতার রস দুপুরে মাথায় লাগালে অথবা রস দিয়ে তেল পাক করে ব্যবহার করলেও চুল পড়া বন্ধ হয়।
৩) মহিলারা শ্বেত প্রদরের শিকার হলে প্রায়ই মাথার চুল উঠে যায়, সেক্ষেত্রে ভূঙ্গরাজের পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে দিনে দুইবার মাথা ধুলে ৩/৪ দিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায় ।
৪) চোখ উঠে পুঁজ জমলে ২০/২৫ ফোঁটা ভৃঙ্গরাজের রস পানিতে মিশিয়ে এ পানি দিয়ে চোখ ধুলে এটি সেরে যাবে।
৫) পাইরিয়া হলে ভৃঙ্গরাজের পাতার গুঁড়া করে মাজনের মত ২/৪ মিনিট ব্যবহার করলে দোষটি সেরে যায়। এছাড়াও এতে মাড়ি শক্ত হয় এবং মাড়িতে কোন ঘা থাকলে পাতার ক্বাথ দিয়ে কয়েকটি দিন মুখ ধুলে সেরে যায়।
৬) গুঁড়া কৃমির উপদ্রব হলে এর পাতার রস পূর্ণবয়স্কদের জন্য এক চা চামচ এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খেলে উপদ্রব কমে যায় ।
৭) অজীর্ণ মল, তার সাথে আমও আছে (পুরাতন আমাশয়), এরকম ক্ষেত্রে ২৫/৩০ ফোটা ভৃঙ্গরাজ পাতার রস প্রতিদিন আধা কাপ ছাগলের দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে হয়।
৮) ভৃঙ্গরাজ পাতার রস মাথায় মাখলে উকুন মরে যায়।
৯) রক্তে শ্বেত কনিকা বেড়ে গেলে ২৫/৩০ ফোঁটা এই পাতার রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে স্বাভাবিক হয়ে আসে।
১০) দাতে ভৃঙ্গরাজ রসের প্রলেপ দিলেও বেশ উপকার হয়।
রাসায়নিক উপাদান : 1. Alkaloids viz, a) Eliptien, b) Nicotine 2. Steroidals constituents 3. Fatty acid