দাঁত ও মুখের রোগ, নিরাপদ চিকিৎসা

দন্ত বা দাঁত

দন্ত বা দাঁত

টুথ (Tooth) বা দন্ত বা দাঁত হলো ক্ষুদ্র , ক্যালসিফায়েড (ক্যালসিয়াম দ্বারা কঠিনিকৃত), সাদা বর্নের বস্তু যা চোয়ালে অবস্থান করে এবং খাদ্য দ্রব্য বিচূর্ণকরণ ও কথা বলতে সহযোগীতা করে। একজন পূর্ণাঙ্গ মানুষের ২৮-৩২ টি দাঁত থাকে।

 

বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য

বাহ্যিকভাবে প্রতিটি টুথ বা দন্তে রয়েছে

১. একটি রুট বা মূল: এটি চোয়ালে প্রথিত থাকে।

২. একটি নেক: এটি গাম বা মাড়ি দ্বারা আবৃত থাকে।

৩. একটি ক্রাউন বা মুকুট: ক্রাউন গাম বা মাড়ি থেকে বাইরে বের হয়ে থাকে।

 

আভ্যরিন গঠন

আভ্যন্তরিনভাবে দন্তের গঠন

১. বাহ্যিক এনামেল: এটি কঠিনতম এবং ক্যালসিফায়েড টিস্যু যা দন্তের ক্রাউনকে আবৃত করে রাখে। এনামেল সারাজীবন তৈরি হয় না এবং একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুনরায় সৃষ্টি হয় না।

২. মধ্যকার ডেনটিন: ডেনটিন দন্তের আকার প্রদান করে। এটি কঠিন, স্থীতিস্থাপক, হলুদাভ সাদা বর্নের এভাসকুলার টিস্যু (রক্তনালী বিহীন কলা)।

৩. আভ্যন্তরিন পাল্প: দন্তের সর্ব অভ্যন্তরে একটি পাল্প ক্যাভিটি রয়েছে। পাল্প হলো বিশেষায়িত লুজ কানেক্টিভ টিস্যু যা পাল্প ক্যাভিটিকে পূর্ণ করে এবং যেখানে ব্লাড ভেসেল (রক্তনালী), লিম্ফেটিক ও নার্ভ রয়েছে।

৪. সিমেন্টাম: এটি একটি ক্যালসিফায়েড টিস্যু যা একটি দন্তের রুট বা মূল কে আবৃত করে রাখে। এটি দাঁতের গোড়াকে তার চারপাশের বোনের সাথে সংযুক্তির মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

 

শ্রেনীবিভাজন

মানুষের দুই ধরনের দন্ত রয়েছে।

১. ডেসিডুয়াল টিথ বা দুধ দাঁত: সংখ্যায় ২০ টি। উৰ্দ্ধ ও নিম্ন চোয়ালে ১০ টি করে। এই দন্তগুলো বয়সন্ধির পূবেই পড়ে যায় এবং এদের স্থলে পারমানেন্ট টিথ উদগত হয়। প্রতিটি আর্চের প্রতি পাশে দন্তগুলো হলো (১)দুটি ইনসিসর। (২)একটি ক্যানাইন। (৩)দুটি মিল্ক মোলার।

প্রতিটি চোয়ালের প্রতিপাশে ডেসিডুয়াস দন্তের সূত্র হলো ২,১,২।

 

২. পারমানেন্ট টিথ বা স্থায়ী দন্ত: সংখ্যায় ৩২ টি, প্রতিটি ডেন্টাল আর্চে ১৬ টি করে। প্রতিটি আর্চের প্রতি পাশে দন্তগুলো হলো (১)দুটি ইনসিসর। (২)একটি ক্যানাইন। (৩)দুটি প্রিমোলার। (৪) তিনটি মোলার (সর্বশেষ মোলার সাধারণত অনেক দেরীতে উদগত হয় এবং এদের উইজডম টিথ বা আক্কেল দাঁত বলে।)

 

প্রতিটি আর্চের( চোয়ালের) প্রতিপাশে পারমানেন্ট টিথ বা স্থায়ী দন্তের সূত্র হলো ২,১,২,৩।

 

সঠিকভাবে মুখের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা না করলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়। এর পর ডেন্টিন ক্ষয় হয়। ফলে পাল্প আক্রান্ত হয় ও দাঁতে ব্যথা হয়।

 

জিনজিভা বা মাড়ি

জিনজিভা (Gingiva) বা মাড়ি মুখগহবরের দিকের ম্যান্ডিবল ও ম্যাক্সিলার মিউকোসাল টিস্যু দ্বারা গঠিত। জিনজিভা দন্তকে চারপাশে অবস্থান করে ও একে নিঃছিদ্র করে। সুস্থ্য জিনজিভা সাধারণত কোরাল পিংক আকৃতির তবে এতে মেলানিন পিগমেন্টেশন (মেলানিন দ্বারা রঞ্জিত) থাকতে পারে। জিনিজিভা দন্তের রুটকে রক্ষা করে। এনাটমি অনুসারে জিনজিভা তিন ভাবে বিভক্ত, মারজিনাল (সীমা), এটাচড (সংযুক্ত), ইন্টারডেন্টাল।

 

জিনজিভার ইনফ্লাশেনকে জিনজিভাইটিস বলা হয়। অপুষ্টি, রাসায়নিক, রক্তের সমস্যা, জীবানু ইত্যাদি কারনে জিনজিভাইটিস হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *