নাক কান গলা রোগ, নিরাপদ চিকিৎসা

গয়টার বা গলগন্ড রোগ ও সকল পদ্ধতির ডাক্তারদের বক্তব্য।

গয়টার বা গলগন্ড বা ঘ্যাগ

গয়েটর একটি গলার রোগ যা আয়োডিনের অভাবে হয়ে থাকে। এর ফলে থাইরয়েড গ্রন্থি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। গয়টার বা গলগন্ড রোগের আসল কারণ হল  শরীরে আয়োডিনের অভাব । আয়োডিনের মাত্রা কম থাকার কারণে, থাইরয়েড গ্রন্থি থাইরক্সিন নামক হরমোনটি তৈরী করতে ব্যর্থ হয় , যার কারণে থাইরয়েড উদ্দীপক হরমোনের (টিএসএইচ) মাত্রা বেড়ে যায়, ফলে থাইরয়েড গ্রন্থিটি ফুলে যায়, যাকে গয়টার বা গলগন্ড রোগ বলা হয়ে থাকে।

গয়টারকে নিম্নরূপে শ্রেণীবিভাগ করা যেতে পারে। যেমন-

১. সিম্পল গয়টার (সাধারণ গয়টার); যখন থায়রয়েড গ্ল্যান্ড এর ক্রিয়ার কোন পরিবর্তন হয় না ;

২. গয়টার উইথ হাইপোথায়রয়ডিজম (গয়টারের সাথে হাইপোরথায়রয়ডিজম): যখন থায়রয়েড গ্ল্যান্ড এর ক্রিয়া হ্রাস পায় ;

৩. গয়টার উইথ হাইপারথায়রয়ডিজম (গয়টারের সাথে হাইপারথায়রয়ডিজম) : যখন থায়রয়েড গ্ল্যান্ড অতিরিক্ত ক্রিয়া প্রদর্শন করে।

 

গলগন্ড রোগ এর প্রধান লক্ষণ  

  • ঘাড়ের নিচের অংশ ফুলে যাওয়া ; 
  • গলার মধ্যে আঁটভাব অথবা কাঠিন্য অনুভব করা ; 
  • গলার আওয়াজে কর্কশভাব ; 
  • কাশি থাকে ; 
  • বৃদ্ধি পাওয়া থাইরয়েড গ্রন্থিটি ইসোফেগাস বা খাদ্যনালীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে যার ফলে খাবার গিলতে সমস্যা হয় ; 
  • শ্বাসনালীতে চাপ পড়ার ফলে নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়। 

গয়টার বা গলগন্ড রোগ এর কারণ

  • আয়োডিনের ঘাটতি: একসময় সারা পৃথিবীতে গলগণ্ড রোগের প্রধান কারণ ছিল আয়োডিনের ঘাটতি। থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হল আয়োডিন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে কমপক্ষে ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন খাওয়া উচিত। আবার  আয়োডিনের আধিক্যের কারনেও গলগণ্ড এবং থাইরয়েডের অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
  • হাশিমোটোস থাইরয়ডাইটিস: এটি সাধারণত অটোইমিউন রোগ। এতে রোগীর নিজের থাইরয়েড গ্রন্থির বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং এর প্রতিক্রিয়া স্বরূপ থাইরয়েড ফুলে যায়। গ্রন্থি ফোলার সঙ্গে সঙ্গে হাইপোথাইরয়েডিজমের উপসর্গ গুলি দৃশ্যমান হয়। 
  • গ্রেভ ডিজিজ: গ্রেভ রোগই প্রধানত থাইরয়েডের হরমোন আধিক্য বা হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণ । এর ফলে গ্রন্থি ফুলে যায় এবং সাথে সাথে আরও কিছু উপসর্গ দেখা যায়। যেমনঃ  চোখের পরিবর্তন, বুক ধড়ফড়ানি, ঘাম, গরম লাগা, ওজন হ্রাস, ডায়রিয়া ইত্যাদি । 
  • থাইরয়েড নডিওল: এক বা একাধিক নডিওল (ক্ষুদ্র গোলাকার গুটি) থাকার জন্য থাইরয়েডের আকার বড় হতে পারে। একাধিক নডিওল থাকার কারণে গলগণ্ডের আকার অনেক বড় হয়ে যায়। 
  • থাইরয়েড ক্যানসার: যদিও অধিকাংশ থাইরয়েড নডিওল নিরীহ ধরনের। তবে কিছু কিছু নডিওল আবার থাইরয়েড ক্যানসারের কারণে হয়। থাইরয়েডের প্রদাহের কারণেও এর আকার বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

কিভাবে গয়টার রোগ  নির্ণয় করা হয় 

শারীরিক পরীক্ষা ও তার সাথে কতকগুলি পরীক্ষার মাধ্যমে গয়টার নির্ণয় করা হয়। পরীক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে:

  •  রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা পরিমাপ করা হয় ; 
  •  রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে গ্রেভস ডিজিজ ও হাশিমোতো ডিজিজের এন্টিবডি সনাক্ত করা হয় ; 
  • এমআরআই ও সিটি স্ক্যান ; 
  • বায়োপসি ; 
  • থাইরয়েডের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য হরমোন টেস্ট করা হয়। 

গলগন্ডের চিকিৎসা

  • ডাক্তার থাইরয়েডের অস্বাভাবিক কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে কিছু ওষুধ নির্ধারণ করতে পারেন। 
  • আয়োডিনের প্রয়োজনীয় মাত্রা বজায় রাখাটা জরুরি। এর জন্য আয়োডিন সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হতে পারে। 
  • অতিসক্রিয় থাইরয়েডের কারণে সেবন করার জন্য রেডিওঅ্যাক্টিভ থাইরয়েড থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের সাথে অবশ্যই পরামর্শ করে নিতে হবে। 
  • ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অথবা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া গয়টারের ক্ষেত্রে, রেডিওঅ্যাক্টিভ থাইরয়েড চিকিৎসার পাশাপাশি অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন হতে পারে।

এর জন্য অনলাইনে আমাদের অবিজ্ঞ দাক্তারদের থেকে পরামর্শ নিতে এখানে ক্লিক করুন  এপয়েন্টমেন্ট

[videogallery id=”goiters-alo”]

[videogallery id=”goiters-homeo”]

[videogallery id=”goiters-harbal”]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *