গাছপালা

শ্বেতচন্দন গাছ

প্রচলিত নাম : চন্দন

ইংরেজী নাম : Santa tree

বৈজ্ঞানিক নাম : Santalum album Linn.

পরিবার : Santalaceae

পরিচিতি : চন্দন চিরসবুজ, পত্রাচ্ছাদিত, সুক্ষ্ম লোমযুক্ত বৃক্ষ, ৩০-৪০ ফুট উঁচু। পত্র ডিম্বাকৃতি, সরু ও লম্বা। ফুল ধূসরের আভাযুক্ত বেগুনে রং বিশিষ্ট। ফল গোলাকার, এর ব্যাস ১.২ সে. মি.। পাকা ফল কৃষ্ণবর্ণ, উপরের আবরণ শক্ত। বাহিরের কাঠ শ্বেতবর্ণ ও গন্ধশূন্য, ভেতরের কাঠ ধূসর বর্ণ ও অতিশয় সুগন্ধযুক্ত। চন্দনের পত্র, ত্বক ও ফুলে কোন প্রকার গন্ধ নেই ।

বিস্তৃতি : বাংলাদেশ ও ভারতের শুষ্ক ও অনুর্বর স্থানে জন্মে।

ব্যবহার্য অংশ : কাষ্ঠ ও পরিসৃত তৈল ।

ঔষধী ব্যবহার :

১) শরীরে বসন্ত রোগ দেখা দিলে হিঞ্চে শাকের রসে শ্বেতচন্দন ঘষালেই মিশিয়ে খেলে বসন্তের গুটি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়ে।

২) ঘামাচি হলে শ্বেতচন্দন ঘষার সঙ্গে সামান্য হলুদবাটা ও কপূর মিশিয়ে মাখলে ঘামাচি মরে যায়।

৩) ঘষা শ্বেত চন্দনের সঙ্গে গোল মরিচ ঘষা মিশিয়ে দিনে তিন চারবার করে বিষ ফোড়ার প্রলেপ দিলে রোগের উপশম

হয়।

৪) আমলকীর রসের সঙ্গে শ্বেতচন্দন ঘষা মিশিয়ে খাওয়ালে বমি বন্ধ হয়।

৫) শ্বেতচন্দন ঘষা লেই দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অপক্ষার রোগে (Epilepsy) উপকার পাওয়া যায় ।

৬) শ্বেতচন্দন ঘষালেই ঠাণ্ডা জলে মিশিয়ে পান করলে শরীর স্নিগ্ধ থাকে। পেটও ঠাণ্ডা থাকে।

৭) চাল ধোওয়া জলের সঙ্গে ঘষা শ্বেতচন্দনের লেই মিশিয়ে ঐ মিশ্রণ প্রতি দু’ঘন্টা অন্তর একটু একটু খাওয়ালে হিক্কা

বন্ধ হয়।

৮) শিশুর নাভি পাকলে শ্বেতচন্দন ঘষে পুরু করে সে জায়গাটায় লাগিয়ে দিলে জ্বালা যন্ত্রণা কমে যাবে।

সাধারণ ব্যবহার : খাঁটি চন্দন কাঠ খুবই মূল্যবান। প্রাচীন পরিণত বৃক্ষ থেকে আহরণ করা কাঠের সারাংশ শক্ত, তৈল প্রধান ও সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত হয়। তবে কাণ্ড অপেক্ষা এর মূলে সুগন্ধি তেলের পরিমাণ বেশি থাকে। গাছের ছাল ছাড়িয়ে দু’মাস মাটিতে পুঁতে রেখে তারপর তা বাজারে বিক্রীর জন্যে পাঠানো হয়। তাছাড়া আমাদের দেশে হিন্দুরা দেব-দেবীর ও শুভকাজে শ্বেতচন্দন ব্যবহার করে থাকে। চন্দন তেল হাল্কা হলুদ রঙের সান্দ্র তরল পদার্থ ও মিষ্ট গন্ধযুক্ত চন্দন সাবান প্রস্তুতিতে এবং প্রসাধন শিল্পে চন্দন তেল বহুল পরিমাণে ব্যবহৃত হয়। চন্দন কাঠের গুঁড়ো দিয়ে সুগন্ধি ধুপকাঠি তৈরী করা হয়। আবার চন্দন কাঠ দিয়ে দামী বাক্স ও নানারকম শিল্পসামগ্রী তৈরী করা হয়

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *