আই বা চক্ষু
আই (Eye) বা চক্ষু দর্শন অঙ্গ। মানবদেহে একজোড়া চক্ষু রয়েছে। চক্ষু অরবিটে অবস্থান করে। চক্ষু একটি বল আকৃতির বা গ্লোব আকৃতির অঙ্গ। তাই এনাটমির ভাষায় একে আই বল নামে অভিহিত করা হয়। প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে সম্মুখ পশ্চাৎ এবং আড়াআড়ি বেড় প্রায় ২৪ মিমি।
আই–এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ সমূহ
কনজাঙ্কটিভা – চোখের পাতার ভেতরের অংশ ও স্লেরার সম্মুখ অংশ আবৃতকারী ঝিল্লি (মিউকাস মেমব্রেন)।
স্লেরা – অসচ্ছ অংশ যা চোখের পেছনদিকের ৫/৬ ভাগ তৈরি করে। স্লেরা তন্তময় কলা দ্বারা তৈরি যা চোখের আকৃতি বজায় রাখে।
কর্ণিয়া- কর্ণিয়া স্বচ্ছ। স্কেলার সামনের এক ষষ্ঠাংশ কর্ণিয়া দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। বাইরে থেকে চোখের সম্মুখে যে অংশ দেখা যায় তাই কর্ণিয়া।
আইরিস- কর্ণিয়া ও লেন্সের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত একটি বৃত্তাকার সংকোচনশীল চাকতি যেখানে পিউপিল নামে একটি গোলাকার রন্ধ্র আছে।
লেন্স – স্বচ্ছ বস্তু যা চোখের সম্মুখ ও পেছনের অংশের মাঝে অবস্থান করে এবং কোন বস্তু দেখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
সাসপেন্সরি লিগামেন্ট – চোখের অভ্যন্তরে অবস্থিত লিগামেন্ট যা লেন্সকে টান টান করে ধরে রাখে।
এন্টেরিয়র চেম্বার- আইরিসের সামনের অংশ । এখানে একুয়াস হিউমার থাকে।
পোস্টেরিয়র চেম্বার- আইরিস ও লেন্স এর মাঝখানের স্থান।
একুয়াস হিউমার:- কর্ণিয়া ও লেন্স এর মাঝে অবস্থিত স্বচ্ছ তরল পদার্থ।
সিলিয়ারি পেশি- চোখের করয়েডের সাথে সংযুক্ত অর্ধস্বচ্ছ বৃত্তাকার মসৃন পেশির বন্ধনী।
কোরোয়েড – পাতলা রঞ্জকযুক্ত স্তর যা রোকে রেটিনা থেকে পৃথক করে।
ভিট্রিয়াস বডি – বর্ণহীন স্বচ্ছ জেলীর মত পদার্থ যা দ্বারা অক্ষিগোলকের পেছনের অংশ পুর্ণ থাকে। |
রেটিনা – চক্ষু গোলকের আভ্যন্তরিন পাতলা স্তর। এই স্তর পেছনের দিকে অপটিক স্নায়ুর সাথে সংযুক্ত অবস্থায় থাকে।
অপটিক ডিস্ক- অপটিক স্নায়ুর অক্ষিগোলকীয় অংশ যা রেটিনার আবরনী তন্তু দ্বারা গঠিত। এর বর্ণ গোলাপী বা সাদা এবং এই অংশ আলোক অসংবেদনশীল। একে পীত বিন্দু ও বলা হয়। অপটিক স্নায়ু- এক জোড়া করোটিক স্নায়ু যা দৃষ্টির অনুভুতি জাগায়।
দৃষ্টির ত্রুটি
সাধারনত দুই ধরনের দৃষ্টি ত্রুটি রয়েছে
বিবর্তন ত্রুটি- চার ধরনের বিবর্তন ত্রুটি রয়েছে।
১. মায়োপিয়া বা স্বল্প দৃষ্টি- এ সমস্যায় দুরের বস্ত আবছা দেখা যায় তবে নিকটের বস্তু তা স্পষ্ট দেখা যায়।
২. হাইপারমেট্রোপিয়া- কাছের বস্তু দেখাটা কষ্টসাধ্য তার
৩. এস্টিগমাটিজম-সুক্ষ বস্তু দেখতে সমস্যা।
৪. প্রেসবায়োপিয়া- সুক্ষ ছাপা অক্ষর দেখা কষ্টকর বিশেষত স্বল্প আলোকে।
সাধারন বিচ্যুতি (এবিরেশন)
১. গোলকাকার বিচতি- এ অবস্থায় বস্তুর কিনারা আবছা দেখায়।
২. দীর্ঘস্থায়ী বিচ্যুতি- এ অবস্থায় বস্তুর কিনারার চারপাশে রংধনু মত রংয়ের ছায়া দেখায়।
বর্ণান্ধতা
এক বা একাধিক বর্ণানুভুতির অভাব বা ত্রুটি কে বর্ণান্ধতা বলে। প্রায় ৮% পুরুষ এবং ০.৪% মহিলা বর্ণানুভুতিতে কিছু ক্রটি প্রদর্শন করে।
শ্রেণী বিভাগ
মুল তিনটি বর্ণ- লাল, সবুজ ও নীল বর্ণানুভুতির ওপর ভিত্তি করে এই শ্রেণীবিভাগ করা হয়।
১. ডাইক্রোমাটিক – যে কোন একটি বর্ণানুভুতি থাকে না।
২. মনোক্রোমাটি – কোন বর্ণেরই বর্ণানুভুতি থাকে না।