পনিয়াল গাছ
প্রচলিত নাম : পনিয়াল
ইংরেজী নাম : Alexandrian Laurel
বৈজ্ঞানিক নাম : Calophyllum inophyllum Linn.
পরিবার : Guttiferae
পরিচিতি : মাঝারী আকৃতির চিরহরিৎ বৃক্ষ (উচ্চতায় ১০-১২ মিটার)। প্রধানতঃ সমুদ্র তীরবর্তী অপেক্ষাকৃত উঁচু বালুময় স্থানে জন্মে। প্রজাতিটির কাণ্ড ঝুঁকে যায়। এমনকি প্রায় মাটিতে শায়িত অবস্থায় থাকে। এর কোন অধোমূল বা রূপান্তরিত মূল নেই। বাকল কাল, বিদীর্ণ এবং হলদে থেকে সাদা বর্ণের আঠোলো তরুক্ষীয় সমৃদ্ধ। পাতা মসৃণ, সরল, প্রতিমূল এবং ক্ষুদ্র বৃন্তযুক্ত পত্রফলক উপ-বৃত্তকার থেকে আয়তাকার, দৈর্ঘ্যে ৮-১৫ সেন্টিমিটার, শীর্ষ সর্বদা গোলাকার। পুস্পমুঞ্জুরী প্রায় ১৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ, পাতার কক্ষ থেকে মঞ্জুরীতে ৫-১৫টি ফুল ফোটে। ফুল সাদা ও উভয় লিঙ্গ। ফল ১ বীজ বিশিষ্ট ডুপ, ফলের ব্যাস ২-৪ সেন্টিমিটার। গন্ধযুক্ত ফুল সারাবছর ফোটে কিন্তু বছরে একবার বেশী সংখ্যায় ফোটে। পরিপক্ক ফল ডিসেম্বরজানুয়ারী মাসে সংগ্রহ করা হয়। অঙ্কুরোদগম মৃৎগত।
বিস্তৃতি : বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে।
চাষাবাদ : চর অঞ্চলের বালু মাটিতে, ঘরের বা বাড়ী সীমানার আশেপাশে সারিবদ্ধভাবে ৬ x ৬ দূরে কয়েক সারি গাছ লাগানো যেতে পারে। পরবর্তীতে গাছ বড় হলে ১২ x ১২ দূরত্বে রাখা যেতে পারে। জলোচ্ছাসের সময় এ গাছ জীবন রক্ষার একটি অবলম্বন হতে পারে। এ গাছের ফুল সাদা। মে-জুন অর্থাৎ বর্ষাকালে ফুল হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে পাকা ফল পাওয়া যায়। বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বেশীদিন থাকে না। কাজেই ফল সংগ্রহের পরপরই নার্সারী বেডে অথবা পলিব্যাগে অঙ্কুরোদগম করাতে হয়। চারার পরিচর্যা অন্যান্য ম্যানগ্রোভ প্রজাতির মতো। মে-জুন মাসে চারা রোপণ উপযোগী হয়ে যায় এক কিলোগ্রামে ২৬০টির মত বীজ ধরে। একটি ফলে প্রায় ৬টি বীজ থাকে। এ গাছ কোন কোন জায়গায় বছরে দুইবার ফল দেয় ।
সাধারণ ব্যবহার : কাঠ শক্ত, লালচে বাদামী বর্ণের, মসৃণ, শক্ত, ভারী ও টেকসই। বীজের তেল জ্বালানী হিসেবে ও সাবান প্রস্তুতে ব্যবহার করা হয়। কাঠ নৌকা ও জাহাজে বিশেষ করে নৌকার মাস্তুল, দাড় ও আসবাবপত্র তৈরীর জন্য উত্তম। গাছ থেকে সুগন্ধযুক্ত হলুদাভ-সবুজ তেল পাওয়া যায় যা সুগন্ধি তৈরীতে ব্যবহার করা হয়। তেল জ্বালানী ও অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হয়।