পরিপাকতন্ত্র
পরিপাকতন্ত্র
মানবদেহের যে তন্ত্রের সাহায্যে পুষ্টি উপাদান পরিপাক ও শোষণ ক্রিয়া সম্পাদিত হয়। তাকে ডায়জেস্টিভ সিস্টেম (Digestive system) বা পরিপাক তন্ত্র বলা হয়। একে এলিমেন্টারী সিস্টেম (alimentary system) ও বলা হয়।
ডায়জেস্টিভ সিস্টেম এর অংশ
ডায়জেস্টিভ সিস্টেম এর নিম্নলিখিত অংশ রয়েছে
ক) ডায়জেস্টিভ ট্রাষ্ট বা পরিপাক নালী
০ মুখগহবর ও জিহবা
০ ইসোফেগাস বা অন্ননালী।
০ স্টমাক বা পাকস্থলি
০ স্মল ইন্টেস্টাইন বা ক্ষুদ্রান্ত । এর তিনটি অংশ রয়েছে যথা – ডিউডেনাম,
জেজ্বনাম, ইলিয়াম
০ লার্জ ইন্টেস্টাইন বা বৃহদান্ত্র : এটি কয়েকটি অংশে বিভক্ত যথা
০ সিকাম, এসেন্ডিং কোলন, ট্রান্সভার্স কোলন, ডিসেডিং কোলন, কা, সিগময়েড কোলন, রেকটাম বা মলাশয় ও এনাল ক্যানাল বা পায়ুপথ।
খ) আনুসাঙ্গিক অঙ্গ: যথা- দাঁত, স্যালাইভারি গ্ল্যান্ড বা লালা গ্রন্থি, লিভার বা যকৃত
১. গলব্লাডার বা পিত্তথলি, প্যানক্রিয়াস বা অগ্নাশয়, অন্ত্রের দেয়ালে অবস্থিত
অন্যান্য পরিপাক গ্রন্থি
ডায়জেস্টিভ সিস্টেমের অঙ্গসমূহের প্রধান কার্যাবলী
অংশ/অংগ।
অবস্থান
প্রধান কাজ
ওরাল ক্যাভিটি মানব দেহের হেড | খাদ্য বস্তুর প্রবেশ পথ।
অঞ্চলে। টিথ
ওরাল ক্যাভিটিতে খাদ্য বস্তু প্রেষন ও কথা বলতে
সাহায্য করা। ওরাল ক্যাভিটি। খাদ্য বস্তু প্রেষন, গলাধকরন ও কথা
বলতে সাহায্য করা। স্যালাইভারী গ্ল্যান্ড। | ওরাল এ ক্যাভিটির । স্যালাইভা বা লালা তৈরি যা খাদ্য
নিকট
দ্রব্য গলাধকরন ও ডায়জেশনে।
সাহায্য করে।
ফ্যারিংস।
ওরাল ক্যাভিটি ওরাল ক্যাভিটি ও ইসোফেগাসের
সংযোগ স্থল ইসোফেগাস নেক অঞ্চলে, থোরাক্স | খাদ্য বস্তু ওরাল ক্যাভিটি থেকে
অঞ্চলে, এবডোমেন | স্টমাকে পৌছানো।
অঞ্চলে। স্টমাক
এবডোমেন।
খাদ্য বস্তু অস্থায়ী ভাবে জমা রাখা। স্মল ইন্টেস্টাইন। এবডোমেন
খাদ্য বস্তু ডায়জেশন ও এবজরপশন
করা। | লার্জ ইন্টেস্টাইন। | এবডোমেন। ডায়জেশন, এবজরপশন ও
অবশিষ্টাংশ নিস্কাশন।।
| লিভার
এবডোমেন।
বাইল তৈরি। ব্লাড এর প্লাজমা
প্রোপ্রোটিন তৈরি। মেটাবলিজম । | গল ব্লাডার | এবডোমেন (লিভারের | বাইল জমা রাখা ও প্রয়োজনে বের
| নিকটে ) ।
করা । বিলিয়ারী এপারেটাস | এবডোমেন (লিভারের | বাইল পরিবহন করা।
নিকটে) প্যানক্রিয়াস
এবডোমেন (স্টমাকের ডায়জেশনের জন্য ডায়জেস্টিভ জ্বস নিকটে)
তৈরি।
ডায়জেস্টিভ সিস্টেমের ক্রিয়া
ডায়জেস্টিভ সিস্টেমে যে সকল ক্রিয়া সম্পাদিত হয়
সঞ্চালন মূলক ক্রিয়া: এর মাধ্যমে খাদ্যবস্তু মুখগহবর হতে মলাশয়ের দিকে ধাবিত হয়।
ক্ষরণমূলক ক্রিয়া: বিভিন্ন পরিপাক গ্রন্থি কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের তরল পদার্থ নিঃসরিত হয়। গ্রন্থিগুলো হলো
লালা গ্রন্থি: তিন জোড়া লালা গ্রন্থি দ্বারা লালা তৈরি হয়। লালার প্রধান কাজ স্বাদ গ্রহন, খাদ্যবস্তুর সাথে জলীয় মিশ্রণ তৈরি এবং খাদ্য বস্তকে পিচ্ছিল করণ। লালা কার্বহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্যকে সামান্য পরিপাক করতে পারে।
পাকস্থলির পাচক রস বা গ্যাস্ট্রিক জ্বস: এর অন্যতম উপাদান। হাইড্রোক্লোরিক এসিড। এই পাচক রস খাদ্যবস্তুতে বিদ্যমান জীবানু ধ্বংস করে ও খাদ্য দ্রব্যকে হজমের উপযোগী করে তোলে ।
বাইল বা পিত্ত: লিভার কর্তৃক সংশ্লেষিত হয় ও পিত্তথলিতে জমা হয় এবং প্রয়োজনে পিত্ত থলি হতে বের হয়ে আসে। বাইল বা পিত্তের প্রধান কাজ চর্বিজাতীয় খাদ্যের পরিপাকে সহায়তা করা এবং মল নরম রাখা ।
প্যানক্রিয়াটিক জ্বস বা অগ্নাশয়ের পাচক রস: এখান থেকেই মূলত পরিপাকের সকল ধরনের পাচক রস নিঃসৃত হয়। এখান থেকে নিঃসৃত রস সকল ধরনের খাদ্যই পরিপাক করে থাকে।
অন্ত্রের ক্ষরণ: এই ক্ষরণ পরিপাক ৰা হজম হওয়া খাদ্যবস্তু শোষন ও মল নরম রাখতে সহায়তা করে। পরিপাক: ভক্ষিত খাদ্যবস্তুকে দেহের উপযোগী করে বিশ্লেষিত করাই পরিপাক। মূলত ক্ষুদ্রান্তে এই পরিপাক সম্পন্ন হয়।
শোষণ: পরিপাক কৃত খাদ্য বস্তু, ঔষধজ ইত্যাদি পরিপাক পথের বিভিন্ন অংশ হতে রক্তে প্রবেশ করাই শোষণ।
বর্জ্য নিস্কাশন: পরিপাককৃg খাদ্যবস্তুর অবশিষ্টাং মল আকারে নিস্কাশন।