আতা Annona Squamosa
আতার আদিবাস ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতে এটি বসতবাড়ীর আঙিনায় এবং বনে-জঙ্গলে জন্মে থাকে। তবে থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এর বাণিজ্যিক চাষাবাদ হয়ে থাকে। আতা গাছ বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। গাছের আকার খুব বড় নয় ; উচ্চতায় ৩ থেকে ৫ মিটার। শীতকালে এর পাতা ঝরে যায় এবং বসন্তকালে নতুন পাতা গজায়, ফুল ধরে। পাতার আকৃতি বল্লমের মতো, অগ্রভাগ সরু। এর ফুল দেখতে কাঁঠালি চাঁপার মতো যার রঙ হালকা সবুজ থেকে সবুজাভ হলুদ হয়ে থাকে। কাচা ফল খাওয়া যায় না। বেলে দো-আঁশ মাটিতে আতা গাছ ভাল জন্মে । বীজ থেকে এর চারা করা হয়। এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ফুল ধরে এবং ৪/৫ মাসের মধ্যে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ফল পেকে যায়। আতাফল হৃৎপিন্ড আকৃতির হয়ে থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যোপদান রয়েছে। পাকা আতার শাঁস মিস্টি হয়ে থাকে। খাওয়ার সময় জিভে চিনির মতো মিহি দানা দানা লাগে। এর কিছু ভেষজ গুণ রয়েছে। যেমন পাকা আতার শাঁস বলকারক, বাত-পিত্তনাশক ও বমনরোধক।
n
nপাকা ফল সুমিষ্ট হওয়ার কারণে অনেক সময়ই পোকার সংক্রমণ হয়, সাদা রঙের পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয় ফল।
আমলকী Amla
-
n
- আমলকী কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে। n
- বমি বন্ধে কাজ করে। n
- দীর্ঘমেয়াদি কাশি সর্দি হতে উপকার পাওয়ার জন্য আমলকীর নির্যাস উপকারী। n
- এটি হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক। n
- এটি দাঁত, চুল ও ত্বক ভাল রাখে। n
- এটি খাওয়ার রুচি বাড়ায়। n
- কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, অম্ল, রক্তশূন্যতা, বমিভাব দূর করতে সাহায্য করে। n
- বহুমূত্র রোগে এটি উপকারী। n
- চোখ উঠলে কাঁচা আমলকীর রস দিনে ২ ফোটা করে দুই বার দিলে ভাল আরাম পাওয়া যায়। n
- চুল ওঠা দূর করতে আমলকী বেশ উপকারী। n
- চুলের খুসকির সমস্যা দূর করে। n
-
n
- আমলকীর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণ। গবেষণায় বলা হয়, আমলকি ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। n
- প্রতিদিন সকালে আমলকীর জুস খাওয়া পেপটিক আলসার প্রতিরোধে কাজ করে। n
- আমলকী শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমায়। n
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আমলকী খুব দ্রুত কাজ করে। আমলকীর গুঁড়ো মধু দিয়ে প্রতিদিন খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। n
কুল বড়ই Kul Boroi
কুল, বরই বা বড়ই বৈজ্ঞানিক নাম Ziziphus zizyphus। দক্ষিণ এশিয়ায় বহুল প্রচলিত, কন্টকপূর্ণ গাছের ফল। ইংরেজিতে একে সচরাচর Jujube বা Chinese date হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র, সর্বপ্রকার মাটিতেই বরই গাছ জন্মে। একটু ডিম্বাকৃতির বরইকে সচরাচর "কুল" বলে অভিহিত করা হয়। বরই গাছ ছোট থেকে মাঝারি আকারের ঝোপাল প্রকৃতির বৃক্ষ। বরই গাছের স্বাভাবিক উচ্চতা ১২-১৩ মিটার। এই গাছ পত্রঝরা স্বভাবী অর্থাৎ শীতকালে পাতা ঝরে, বসন্তে নতুন পাতা আসে। বরই গাছের ডাল-পালা ঊর্ধ্বমুখী। বৎসরের সেপ্টেম্বরে - অক্টোবরে মৌসুমে গাছে ফুল আসে। ফল ধরে শীতে। ফল গোলাকার, ছোট থেকে মাঝারি। ফল আকারে ছোট, কমবেশী ২.৫ সেন্টিমিটার। ফল পাকলে রঙ হলুদ থেকে লাল বর্ণ হয়। কাচা ও পাকা উভয় পদের বরই খাওয়া হয়। স্বাদ টক ও কাঁচামিঠা জাতীয়। বরই রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। পাকা বরই শুকিয়ে চাটনী প্রস্তুত করা হয়।
জামরুল Champoo
এটি বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সামোয়া, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ইত্যাদি দেশে জন্মে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে জামরুলের ব্যাপক চাষ হয়। .
n
nরোগপ্রতিরোধ:
n
nজামরুল গাছে পোকা-মাকড় ও রোগবালাইয়ের তেমন কোনে উপদ্রব দেখা যায় না। কচি পাতা খেকো পোকার আক্রমণ কদাচিৎ দেখা যায়। এদের দমনের জন্য প্রতি লিটার জলে ২ মিলি সুমিথিয়ন মিশিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।
লটকন Latkan
বাংলাদেশে একসময় অপ্রচলিত ফলের তালিকায় ছিল লটকন। অধুনা এর বাণিজ্যিক উৎপাদন ব্যাপক আকারে হচ্ছে। উন্নত জাতের সুমিষ্ট লটকনের চাষ বৃদ্ধির সাথে সাথে এর জনপ্রিয়তাও বেশ বেড়েছে। এদেশের নরসিংদীতেই লটকনের ফলন বেশি। এ ছাড়া সিলেট, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাজীপুর—এসব জেলায়ও ইদানীং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লটকনের চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে লটকন বিদেশেও রফতানি করা হয়। লটকনে আছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় সহায়তা করে।