চর্ম ও যৌন রোগ, নিরাপদ চিকিৎসা

সোরিয়াসিস

সোরিয়াসিস

মানুষের ত্বকের কোষ স্তর প্রতিনিয়ত মারা যায় আবার প্রতিনিয়ত হয়। সোরিয়াসিস হলে এই কোষ স্তর বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায়। মূলত সোরিয়াসিস তুকের একটি প্রদাহজনিত রোগ। এটি ছোঁয়াচে রোগ নয়। এই রোগের কারণ হিসেবে জিনগত ত্রুটিকে দায়ী করা হয়।

 

সাধারণত কনুই, হাঁটু, পায়ের গেড়ালীর উপরের ভাগ, হাতের কবজির উপরের অংশ ও নখেও এটি বেশি হতে দেখা যায়।

 

ব্যক্তিভেদে লক্ষণ কিছুটা ভিন্নতর হতে পারে। সাধারণত এই রোগে আক্রান্ত হলে ত্বক। পুরু হয়ে লালচে দাগ পড়ে। ত্বক চুলকাতে পারে, ব্যথাও হতে পারে। আক্রান্ত স্থান রুপালি-সাদা আঁশ দ্বারা আবৃত থাকে এবং লালচে বর্ণের ক্ষত দেখা যায়। । নখের রং নষ্ট হয়ে গর্ত হয়ে যায়। যে সব রোগী বহু বছর ধরে এই রোগে আক্রান্ত, তাঁদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ওপর এই রোগের প্রভাব পড়ে। এ থেকে লিভারের রোগ, আথ্রাইটিস, হৃদ্‌রোগ ও রক্তে কোলেস্টেরলের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।

 

মানসিক চাপ, লাল মাংস, কিছু কিছু ঔষধ এই রোগের বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। তাই এগুলো থেকে বিরত থাকতে হবে। আক্রান্ত স্থানে সরাসরি রোদ্রালোক পড়তে দেয়া যাবে না। ত্বক আর্দ্র রাখতে হবে। আক্রান্ত ত্বকে কোনো আঘাত বা কাটাছেড়া হলে জটিলতা বাড়ায়, তাই সাবধান থাকতে হবে। এই রোগ কখনই সারে না। আবার এ রোগের কারণে মৃত্যুও হয় না। নিয়মিত চিকিৎসাসেবা নিলে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের জন্য দীর্ঘদিন (ক্ষেত্র বিশেষে আজীবন) চিকিৎসা নিতে হয়। পুরোপুরি ভাল হয়না বলে এর চিকিৎসা না করানো কখনোই উচিৎ নয়। কারণ সোরিয়াসিসকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে নইলে এটি দেহের আভ্যন্তরিন অঙ্গকে আক্রান্ত করবে। এই রোগের চিকিৎসা ধাপে ধাপে করার প্রয়োজন হতে পারে। তাই নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

আমাদের দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রোগী প্রাথমিক অবস্থায় না গিয়ে মধ্য ও অতি জটিল পর্যায়ে চিকিৎসকের নিকট যান। ফলে দ্রুত রোগ উপশম সম্ভব নাও হতে পারে। এতে রোগী পুনরায় চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এবং মনমত চিকিৎসা করাতে থাকেন (যেমন- অন্যকারো প্রেসক্রিপশন দেখে ঔষধ ব্যবহার, পল্লী চিকিৎসকের নিকট থেকে মলম কিনে ব্যবহার ইত্যাদি)। ফলে রোগ আরো জটিলতর হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় একটি প্রেসক্রিপশনে রোগীর উন্নতি হয়েছে। তাই আর পুনরায় চিকিৎসকের নিকট না গিয়ে নিজে থেকেই প্রেসক্রিপশনের ঔষধ সেবন ও ব্যবহার করতে থাকেন। এতেও প্রথম দিকে উপশম হলেও পরবর্তীতে আরো জটিলতর হয়।

 

এই রোগে আক্রান্ত হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ মত চিকিৎসা নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *