n
কৈলাসের প্রথম বিস্তার ঘটেছিল প্রায় দুশ’ বছর আগে রাণী ভিক্টোরিয়ার আমলে। এগুলো বেশিরভাগ রাখা হত পার্লারের অভ্যন্তরে।ভিক্টোরিয়ান পার্লারগুলো ছিল বসতবাটির বিশাল আকারের ড্রইংরুমের মত যা বাড়ির লোকজন নিয়মিত ব্যবহার করত না, কেবল রবিবারে অতিথিকে আপ্যায়ন করা হত সেখানে।খুবই নান্দনিকভাবে রঙ-বৈচিত্র্যে অলংকৃত করা হত বিশাল ঘর যার আলোকিত জানালার পাশে স্থান পেত বিচিত্র রঙের কৈলাস, যা কিনতে হত প্রচুর মূল্য দিয়ে। ইন্দোনেশীয় দ্বীপ জাভা থেকে তখন এসব কৈলাসের আগমন ঘটতো পার্লারকে কেন্দ্র করে।অত্যধিক মূল্যের কারণে কৈলাসের ব্যবহার সীমিত রয়ে যায় অবস্থাপন্ন অভিজাত মানুষের ভিতরেই।পরবর্তীতে উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষও একে ব্যবহার করতে শুরু করে।
n
পুরাতন ভিক্টোরিয়ান গার্ডেনগুলোতে কৈলাস লাগানো হত ‘কার্পেট গার্ডেনিং’ পদ্ধতিতে। কোনো উঁচু বিল্ডিংয়ের জানালা বা বারান্দা থেকে দেখলে একে পারস্য গালিচার মত দেখা যেত, যাকে বলা হত ‘লিভিং কার্পেট’।
n
n
কৈলাসের বর্তমান বৈজ্ঞানিক নাম ‘প্লেকট্রানথাস স্কুটেলারিঅয়ডিজ’ (Plectranthus scutelarioides)। প্লেকট্রান্থাস গণে প্রায় শ’তিনেক উদ্ভিদ রয়েছে যা ‘লামিয়েসিয়ি’ (Lamiaceae) পরিবারের অন্তর্গত। এই পরিবারে পরিচিত উদ্ভিদদের মধ্যে রয়েছে তুলসি, পুদিনা, ল্যাভেন্ডার, অরেগ্যানো ইত্যাদি। এই গাছ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আফ্রিকা প্রভৃতি দেশগুলোতে জন্মাতে দেখা যায়।গ্রীক ‘কোলিয়াস’ থেকে বাংলাদেশে একে আত্তীকরণ করা হয়েছে ‘কৈলাস’ নামে।
n
n
n
কাটিং বা বীজ থেকে কৈলাসের চারা উৎপন্ন করা যায়। অনুর্বর মাটিতেও কৈলাস জন্মাতে পারে। টব প্রস্তুতিতে ১ ভাগ মাটির সাথে ২ ভাগ বালি ও ২ ভাগ পিট মিশিয়ে নেয়া ভাল।ইন্ডোরে একে জানালার ধারে উজ্জ্বল আলোকিত স্থানে রাখা ভাল। সকাল বা বিকালের কিছুটা সময় সরাসরি সূর্যালোক পাওয়া গাছের জন্য ভাল কিন্তু দুপুরের তীব্র আলোক অধিকাংশ প্রজাতিই সহ্য করতে পারে না। প্রকৃতিতে এটি ক্রান্তীয় অঞ্চলে অন্য গাছের নিচে জন্মায় যেখানে আলোর পরিমাণ থাকে কম ও পরোক্ষ। এখন কিছু কিছু তীব্রআলোকে বেঁচে থাকা কাল্টিভার তৈরি হয়েছে যেমন বারগ্যান্ডি সান, সোলার ফ্লেয়ার, সোলার একলিপস্ ইত্যাদি।
n
কৈলাস মূলত পত্রসর্বস্ব গাছ।কিন্তু এর সুন্দর ফুলও হয়।ফুল থেকে বীজ তৈরী করে নতুন চারা প্রস্তুত করা যায়।
n