বট গাছ
প্রচলিত নাম : বট
ইংরেজী নাম : Baniyan tree
বৈজ্ঞানকি নাম : Fictus bengalensis Linn
পরিবার : Moraceae
পরিচিতি : বৃহদাকার, মুকুট ছড়ানো চিরসবুজ বৃক্ষ। উচ্চতায় ৩০-৫০ মিটার পর্যন্ত হয়। গাছের শাখা থেকে অসংখ্য বায়বীয় মূল গজিয়ে নীচের দিকে মাটিতে স্পর্শ করে সহায়ক কাণ্ডের সৃষ্টি করে। পাতা সরল পর্যায়ক্রমিক, ১০-২০ x ৫-৮ সে. মি. পত্র ফলকের শীর্ষদেশ গোলাকার। বাকল ছোট ছোট প্লেটে বিভক্ত। ফল ফিগস ছোট গ্লোবুজ, সবৃন্তক, ১-২ মি. মি. ব্যাস কাক্ষিক এবং ৪-৭ ফল একত্রে থাকে।
বিস্তৃতি : বাংলাদেশের সর্বত্র।
সাধারণ ব্যবহার : কাঠ ধূসর, হালকা, মোটামুটি শক্ত। পানিতে টেকসই। সহায়ক কাণ্ডের কাঠ প্রধান কাণ্ডের চেয়ে শক্ত। কাঠ নলকূপে, তাবুর খুঁটি, সস্তা আসবাবপত্র, জোয়াল, বাক্স নির্মাণ ও জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাকলের কস থেকে পাথরী চুন তৈরী হয়।
ঔষধি ব্যবহার :
১. আমাতিসার : যেখানে দাস্তের সঙ্গে শরীরের দহ থাকে, যেখানে পিত্ত বিকার হয়েছে এইটাই প্রমাণিত; কেবলমাত্র সেই অতিসারে বটের কুঁড়ি (পল্লবের শীর্ষভাগের অংশটি) ২টি করে বেটে তিন ঘন্টা অন্তর ২/৩ বার আতপ চাল ধোওয়া জল দিয়ে খেতে দিলে ওটার উপশম হবে। তবে শিশু বা বালকের মাত্রা বয়সানুপাতে। এটাতে দু’দিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুফল পাওয়া যায়।
২. শুক্রতারল্যে : এক্ষেত্রে বটের আঠা ৩০-৪০ ফোঁটা দুধে মিশিয়ে সকালে-বিকালে ২ বার খেতে হয়।
৩. ধসা মেটে : ঢোলা শরীর, মেদের যেন কোন আটস্বাস নেই; সেক্ষেত্রে ৫/৬ গ্রাম বটের ছাল থেঁতো করে এক কাপ গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে, পরেরদিন ঘেঁকে ওটা সকালে ও বিকালে দুইবার খেতে হবে।
৪. রক্ত প্রদাহে: (স্ত্রী-রোগ) মাসিক হলে দীর্ঘদিন ধরে চলে কখনও বেশী কখনও কম, প্রস্রাবে গন্ধ থাকে, আবার এটা কমে গেলে চুলকায়, এক্ষেত্রে বটছাল ৫ গ্রাম ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে হেঁকে একটু দুধ ও চিনি মিশিয়ে খেতে হবে। তবে ছাগল দুধ হলে ভাল হয়। এছাড়া, এটা সিদ্ধ করার সুবিধে না হলে ওটা থেঁতো করে গরম জলে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন ঘেঁকেও খাওয়া যায়।
৫. ফোঁড়ায় : বেয়াড়া জায়গা, সেখানে কমপ্রেস করতে নেই আবার করাও অসুবিধে, সেখানে বটের কচিপাতা বেটে লাগিয়ে দিতে পারলে ওটা বসে যায়, কারণ এসব জায়গায় পাকানো বা ফাটানো উচিত নয়।
৬. পা ফাটায় : এটা হয় বায়ু পিত্তাধিক্য প্রকৃতির লোকের। যাদের ফাটে তাদের স্বভাবটা হবে নিজের কোলে ঝোলটা বেশী টানা আন্তরিকতায় তারা সদা তৎপর। তারা পায়ে ফাটা আসছে দেখলেই শুরুতেই বটের আঠা পায়ের গোড়ালি বা ধারে লাগিয়ে দেবেন, ওটা আর আসবে না।
৭. শৈথিল্য স্তনে: বটাবরোহ (বটের ঝুরি) অগ্রভাগের কুট অংশটা জলসহ বেটে চন্দনের মত করে স্তনে লাগালে শৈথিল্য কমে যায়।
৮. দন্তশূলে : বটের আঠা লাগালে উপশম হয়।